বাংলা৭১নিউজ,মো. কামাল হোসেন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের আঝইর গ্রামে ১ হাজার মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি এইচবিবি রাস্তা নির্মাণে হাজারও অভিযোগ উঠেছে। বাধার মুখে বন্ধ হয়ে গেছে রাস্তার কাজও। গ্রামবাসীর অভিযোগ, রাস্তা নির্মাণের নামে হরিলুট চলছে। নি¤œমানের ইট দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। পরিমাণমতো বালুও দেয়া হচ্ছে না। এভাবে রাস্তা নির্মিত হলে এর স্থায়িত্ব এক মাসও হবে না। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তার কাজ বন্ধ করা হয়েছে। এদিকে রাস্তা নির্মাণে কোনোরকম অনিয়ম হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, নাচোল উপজেলার কসবা ইউনিয়নের আঝইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে আঝইর মেইন রাস্তা পর্যন্ত প্রায় ১০০০ মিটার (১ কিলোমিটার) রাস্তা এইচবিবিকরণের কাজ গত ২০ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহা. গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস। নাচোল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে গ্রামীণ রাস্তাসমূহ টেকসইকরণের লক্ষ্যে হেরিংবোন বন্ড (এচইবিবি)করণ প্রকল্পের আওতায় রাস্তাটি নির্মিত হচ্ছে। ৩৬ লাখ ১০ হাজার টাকার চুক্তিমূল্যের রাস্তা নির্মাণে দায়িত্ব পেয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রনি এন্টারপ্রাইজ।
সরেজমিনে গত শুক্রবার আঝইর গ্রামে গেলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নির্মাণের শুরু থেকেই রাস্তায় নি¤œমানের ইট ব্যবহারের চেষ্টা করলে গ্রামবাসী সম্মিলিতভাবে বাধা দেয়। সে সময় নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা নি¤œমানের ইট ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিলে রাস্তার কাজ শুরু হয়। কিন্তু শুরুর কয়েকদিন পর আবারও নি¤œমানের ইট আনতে দেখে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং রাস্তা নির্মাণে বাধা দেয়। বাধার মুখে কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গত শুক্রবার গ্রামবাসী পুরোপুরি কাজ বন্ধ করে দেয়।
আঝইর গ্রামের ইসরাফিলের ছেলে ইউসুফ আলী আক্ষেপ করে বলেন, ‘১ হাজার মিটার রাস্তায় অভিযোগ হাজার মানুষের।’ তিনি বলেন, ‘খুবই নি¤œমানের ইট দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে। রাস্তার নিচে ভাঙা ইটও ব্যবহার করছে তারা। বালুও দেয়া হচ্ছে দায়সারাভাবে। এভাবে রাস্তা বানানোর চেয়ে না বানানোই ভালো।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে বাজেট ধরা হয়েছে তাতে পিচ দিয়েই রাস্তা করা যেত।’
ইয়াসিন আলীর ছেলে সাজেমান জানান, ইটের মান এতই নি¤œমানের যে এক-দুই হাত উঁচু থেকে ফেললেই ভেঙে কয়েক টুকরো হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রত্যক্ষ প্রমাণও দেখান। তিনি আরও জানান, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
শিক্ষক গাজীউল আলম জানান, গ্রামবাসী শুরু থেকেই নি¤œমানের ইট ব্যবহার না করার দাবি জানিয়ে এলেও ঠিকাদার তাতে কর্ণপাত করছেন না। বাধার মধ্যেই তারা অর্ধেকেরও বেশি রাস্তার কাজ করে ফেলেছে। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্যকে অবহিত করার চেষ্টা চালাচ্ছি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আক্কাস মেম্বার রাস্তায় কোনো নি¤œমানের ইট ব্যবহার হচ্ছে না দাবি করে বলেন, ‘যেগুলো নি¤œমানের ইট এসেছিল আমরা তা ফেরত দিয়েছি।’
রনি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো: রনির সাথে গতকাল শনিবার মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন পূর্বে যে সকল ইট ব্যবহার করা হয়েছে তা ১নম্বর তবে যে সকল ইট বর্তমানে রাস্তার পাশে রাখা হয়েছে তা পরিবর্তন করা হবে । এ বিষয়ে নাচোল উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খাইরুল আনামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, টেন্ডার টি ঢাকা থেকে করা হয়েছে আমরা শুধু দেকভাল করবো। তবে অভিযোগ পেয়ে রাস্তার কাজ বন্ধ করা হয়েছে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস