বাংলা৭১নিউজ,হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ। সড়ক দিয়ে চলতে এদিকে-ওদিকে তাকালেই চোখে পড়ছে হলুদের সমারোহ। ফুল থেকে মধু আহরণে ব্যস্ত এখন মৌমাছির দল। তাতে ফসলের মাঠে ছড়াচ্ছে এক নান্দনিক আবহ।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষার উৎপাদন লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় কৃষকেরা। ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকেরাও।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার ছোট্র এ উপজেলায় গত মৌসুমে ৭১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। এবার আবাদ বেড়ে ৮২০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। ধান বা অন্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝঁকছেন।
গত কয়েকদিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, সরিষার হলুদ ফুলে শোভায় সেজেছে ফসলের মাঠ। স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধানের উৎপাদন খরচ বেশী, দাম কম। প্রতি বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদে সেচ, সার, বিজ, কিটনাশক ও শ্রমিক মিলে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু উৎপাদিত ধান বিক্রি করে তেমন লাভ থাকেনা।
অন্যদিকে প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা আবাদে খরচ হয় মাত্র ১ হাজার ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৮শ’ টাকা। ভালো ফলন হলে এক বিঘা জমি থেকে ৬ মণ পর্যন্ত সরিষা পাওয়া য়ায়। বর্তমানে প্রতি মণ সরিষার বাজার মূল্য ১ হাজার ৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা পার্যন্ত। এক্ষেত্রে প্রতি বিঘা জমি থেকে সব খরচ বাদ দিলেও ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা লাভ থাকে। ফলে চলতি মৌসুমে সরিষার আবাদ কিছুটা বেড়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সরিষা ঘরে উঠবে।
উপজেলার খাট্রাউছনা গ্রামের কৃষক রাজ্জাক হোসেন জানান, তিনি ৪ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। ফুল বেশ ভালো ধরেছে। হঠাৎ বৃষ্টি না হলে ফলন ভালো হবে। ঠিক ঠাক মতো ফসল ঘরে তুলতে পারলে তিনি কমপক্ষে ২৫/৩০ হাজার টাকা লাভ করবেন বলে আশা করছেন। মহেশপুর গ্রামের কৃষত আলতাফ জানান, বীজ বপনের মাত্র দুই মাসের মধ্যে সরিষা ঘরে ওঠে। এছাড়ও চলতি মৌসুমটা সরিষার জন্য বেশ অনুকূল আছে। ফলে এবার সরিষা থেকে ভালো লাভের আশাও আছে।
এ ব্যাপারে হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা নাজনীন জানান, জমির অবস্থা বুঝে কৃষকদের সঠিক মাত্রায় সার ও কীটনাশক দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও সরিষা আবাদে কৃষকদের উৎসাহিকত করতে ১৪০ জন কৃষকদের বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ