বাংলা৭১নিউজ, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে সরলে দেশে রক্তের বন্যা বইয়ে যাবে’ ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যকে ‘উপলব্ধি’ হিসেবে দেখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ওবায়দুল কাদেরকে লক্ষ্য করে প্রশ্ন রেখেছেন, ‘হঠাৎ এই উপলব্ধি হলো কেন?’
সোমবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন ফখরুল। জেলা বিএনপির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তিনি।
সম্প্রতি দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দেয়া ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্যের প্রসঙ্গ টানেন ফখরুল। বলেন, ‘এর আগে আমরা বলেছিলাম সাহস থাকলে একদিনের জন্য ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান। দেখুন জনগণ আপনাদের অবস্থা কী করে। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এক ঘণ্টাও যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতার বাইরে থাকে তাহলে নাকি দেশে রক্তের নদী বয়ে যাবে। তিনি আওয়ামী লীগের কর্মীদের বলেছেন আপনারা টিকতে পারবেন না।’
‘হঠাৎ এই উপলব্ধি কেন? কারণ আওয়ামী লীগ নিশ্চিত যে, তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। জোর করে, মানুষ খুন করেই তাদেরকে ক্ষমতায় টিকিয়ে থাকতে হবে। সেজন্যই তারা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া হাইকোর্টে জামিন পেয়েছেন, সেটাকে বিলম্বিত করার পরেও তিনি সুপ্রিম কোর্ট থেকেও জামিন পেয়েছেন। কিন্তু সেই জামিনেও তাকে মুক্ত হতে দিচ্ছে না এই সরকার। যার কারণ একটাই, সেটা হচ্ছে এই সরকার বেগম জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে চায়। আসন্ন নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিতে চায়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার শুধু নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য বেগম খালোদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রেখেছে। এই সরকার সম্পূর্ণভাবে একটি গণবিচ্ছিন্ন সরকার।’
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আর সেই আওয়ামী লীগ নেই। যে আওয়ামী লীগ আমরা দেখেছি ১৯৭১ সালের আগে। স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বে। যারা স্বাধীনতার জন্য, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন, যারা মানুষের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করেছিলেন সেই আওয়ামী লীগ আর নেই। আজকে দেশে আওয়ামী লীগেই সবচেয়ে বড় নির্যাতনকারী হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা দমন করছেন ভিন্ন মতকে। গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিন মাস আগেই আইনগতভাবে বেগম খালেদা জিয়া কারাগার বেরিয়ে আসার কথা। কিন্তু এই সরকার পরিকল্পিতভাবে একটার পর একটা মামলা দিয়ে তাকে আটকে রাখার চেষ্টা করছে।’
তিনি উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের যেভাবে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে ঠিক একই কায়দায় বেগম খালেদা জিয়াকে মামলা জড়ানো হচ্ছে।’
ফখরুল বলেন, ‘যে কারাগারটিতে ম্যাডামকে রাখা হচ্ছে সেটা একটি নির্জন কারাগার। যেখানে অন্য কোনো বন্দী থাকে না। যেখানে একসময় কমপক্ষে ১২ হাজার বন্দী থাকতো, সেখানেই এখন একমাত্র বন্দী বেগম খালেদা জিয়া।’
‘একদম নির্জন জায়গায় তাকে আবদ্ধ রাখা হয়েছে। সেখানে তার প্রতি যে আচরণ করা হচ্ছে সেটা বাংলাদেশের কোনো সংবিধান অনুযায়ী কখনোই কোনো নাগরিককে করার কথা নয়।’
এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হলে দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে বলে জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আমিনসহ স্থানীয় নেতারা। সৌজন্যে: ঢাকাটাইমস।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস