প্রতিবছর হজ ফ্লাইটের ভাড়া বাড়ছে, যা যাত্রীদের খরচ বাড়াচ্ছে হজযাত্রায়। ২০১৭ সালে বিমানভাড়া ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৭৩২ টাকা। বাড়তে বাড়তে ২০২৩ সালে বিমানভাড়া হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা। এককভাবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যে ভাড়া নির্ধারণ করে তা অযৌক্তিক বলে মনে করেন হজ এজেন্সির মালিকরা। সরকারের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করে ভাড়া নির্ধারণের দাবিও ছিল হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন ‘হজ্জ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর’। আগামী হজে বিমানভাড়া কমিয়ে সহনীয় রাখতে বিমান প্রতিমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে হাব।
অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার স্বাক্ষরিত চিঠি ৫ সেপ্টেম্বর বিমান প্রতিমন্ত্রীকে পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, হাব সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে সততা ও নিষ্ঠার সাথে সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে। পবিত্র হজের সঙ্গে বাংলাদেশের মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতি নিবিড়ভাবে জড়িত। বিষয়টি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভীষণ রকমের স্পর্শকাতরও বটে। কেবল হজযাত্রীদের পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশীই নয়, বাংলাদেশের সকল মুসলিম নাগরিক হজ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে।
২০২৩ সালের হজযাত্রীদের অতিরিক্ত বিমান ভাড়া এবং হজ প্যাকেজের উচ্চমূল্য নিয়ে হজযাত্রীসহ ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয় উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ‘২০২৩ সালে বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবতার নিরিখে অনেক বেশি ও অযৌক্তিক ছিল। যে কারণে হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর সর্বমহলে তা গ্রহণযোগ্য হয়নি, বরং সমালোচিত হয়েছে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘যেহেতু বিমান একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের একক কর্তৃত্বে বিমান ভাড়া নির্ধারণ যথাযথ হয়নি। ২০২২ সালে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ১২ হাজার টাকা বৃদ্ধি করে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। মূলত করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধে জেট ফুয়েলের মূল্য বৃদ্ধি এবং তখন করোনায় বিমানের কিছু আসন খালি রেখে ফ্লাইট পরিচালনার যুক্তি দেখিয়ে এটা করা হয়েছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের প্রত্যাশা ছিল— করোনা পরবর্তী বিমানভাড়া কমবে। কেননা, জেট ফুয়েলের মূল্য বৃদ্ধি পায়নি। সৌদি আরব কোনও নতুন চার্জ আরোপ করেনি।’
২০২৩ সালের বিমানের আসন খালি রেখে হজযাত্রী পরিবহন করতে হয়নি। অথচ ২০২৩ সালের হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ২০২২ সালের থেকে ৫৭ হাজার ৭৯৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ‘এই বেশি মূল্যের বিমানভাড়া এ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ অযৌক্তিক ও অসহনীয় মনে করেছেন এবং তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। তাই ২০২৪ সালের বিমানভাড়া নির্ধারণে উল্লেখিত বিষয়গুলো আমলে নিয়ে ২০২৩ সালের বর্ধিত ভাড়া থেকে কমিয়ে যৌক্তিক ও সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি। বাংলাদেশ অংশে হজের খরচের প্রায় সিংহভাগই বিমানভাড়া। সঙ্গত কারণেই হজযাত্রীদের বিমানভাড়া কমিয়ে ২০২৪ সালের বিমানভাড়া সহনীয় ও যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করা অত্যাবশ্যক।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের মাধ্যমে হজযাত্রীদের বিমানভাড়া নির্ধারণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ কামনা করেন হজ এজেন্সির মালিকরা।
বাংলা৭১নিউজ/এবি