চীনের সামরিক গবেষকদের একটি দল বলছে যে, তারা স্যাটেলাইট-বিরোধী রোবোটিক ডিভাইস তৈরি করেছেন। এরই মধ্যে তা পরীক্ষাও করেছেন চীনা বিজ্ঞানিরা। সেই ডিভাইসে বিস্ফোরকের একটি ছোট প্যাকেট রাখতেও সক্ষম বলে জানিয়েছেন তারা।
স্যাটেলাইটকে টুকরো টুকরো করে উড়িয়ে দেওয়ার পরিবর্তে দ্রবীভূত বিস্ফোরক ‘সময় নিয়ন্ত্রিত, স্থির বিস্ফোরণ’ ঘটাতে পারে। জিয়াংটানের হুনান ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি পলিটেকনিকের অধ্যাপক সান ইউনঝং এবং তার সহকর্মীরা গত মাসে চীনা জার্নাল ইলেকট্রনিক টেকনোলজি অ্যান্ড সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে সে ব্যাপারে বিস্তারিত লিখেছেন।
বৈদ্যুতিক মোটর দ্বারা পরিচালিত এবং লকিং প্রক্রিয়া ব্যবহার করে ডিভাইসটি দীর্ঘ সময়ের জন্য স্যাটেলাইটের ভিতরে অবস্থান করতে পারে। প্রয়োজন হলে এ প্রক্রিয়াকে টার্গেট থেকে আলাদা করার জন্য উল্টানোও যেতে পারে।
পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে রকেট মিসাইলের জন্য নতুন ধরনের ওয়ারহেড তৈরির জন্য সরকারি একটি প্রজেক্টের মাধ্যমে তাতে অর্থায়ন করা হয়েছিল।
ডিভাইসটি স্থল সুবিধায় নির্মিত এবং সে ব্যাপারে পরীক্ষা করা হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, এটি নির্দিষ্ট প্রকৌশল অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহারিক গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
এর আগে ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো স্যাটেলাইট-বিরোধী অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। একটি ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে আবহাওয়া বিষয়ক স্যাটেলাইট ধ্বংস করে আন্তর্জাতিক সমালোচনার শিকার হয়।
‘কোল্ড ওয়া’ চলা অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন একই ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিল। তবে, ১৯৮০ এর দশক থেকে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কারণ এতে করে মূল্যবান মহাকাশ সম্পদ এবং মহাকাশচারীদের ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া হচ্ছিল।
এদিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্যাটেলাইট-বিরোধী প্রযুক্তি উদ্ভাবনে মনোনিবেশ করেছে চীন। চীনের স্যাটেলাইট-বিরোধী কর্মসূচি এমন প্রযুক্তির দিকে মনোনিবেশ করেছে- যা সামান্য ধ্বংসাবশেষ তৈরি করবে। রোবোটিক অস্ত্র দিয়ে একটি স্যাটেলাইট ক্যাপচার করতে পারবে তারা।
চীনা সামরিক বাহিনী বিভিন্ন ধরনের স্থলভিত্তিক অস্ত্রও তৈরি করেছে; যা একটি লেজার রশ্মি দিয়ে স্যাটেলাইটকে অন্ধ বা এর ক্ষতি করতে পারে।
কিন্তু সেসব পদ্ধতি শনাক্ত করা তুলনামূলকভাবে সহজ। সে কারণে চীনা গবেষকরা ডিভাইসের ভেতরে বিস্ফোরক স্থাপন করে স্যাটেলাইটগুলোকে টার্গেট করার অন্য উপায় খুঁজছিল। অবশেষে তারা সেই কৌশল রপ্ত করার দাবি করেছে। আর সেই বিষটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী।
এ বছরের এপ্রিলে মার্কিন স্পেস কমান্ডের প্রধান জেনারেল জেমস ডিকিনসন কংগ্রেসকে বলেছিলেন যে, শিজিয়ান-১৭ এর প্রযুক্তি ভবিষ্যতে অন্য স্যাটেলাইটগুলোকে কব্জা করতে ব্যবহার করা হতে পারে।
এ সপ্তাহের শুরুতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, ‘চীনা হুমকি তত্ত্ব’ প্রচার করছে যুক্তরাষ্ট্র। যাতে করে তারা নিজেদের সামরিক শক্তি আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ