চারদিক মেঘনার শাখা-প্রশাখা বেষ্টিক দুর্গম একটি জনপদ নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরআড়ালিয়া। বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে এখানে চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা। সাম্প্রতি এখানকার বাসিন্দারা নিজস্ব অর্থায়ন ও স্বেচ্ছাশ্রমে আমিরগঞ্জের মাছিমনগরঘাট হতে চরআড়ালিয়ার বটতলীঘাট পর্যন্ত মেঘনার শাখার ওপর নির্মাণ করেছেন একটি কাঠের সেতু। এতে বহুদিনের কষ্ট লাঘবের পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতুটি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন লোকজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দশলাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত কাঠের সেতুটি দৈর্ঘ্য ৪০০ ও প্রস্থ ৬ ফুট। সেতু নির্মাণে সময় লেগেছে দেড়মাস। মেঘনার শাখায় সেতু নির্মাণের ফলে রায়পুরা ও নরসিংদী জেলা সদরের সঙ্গে চরআড়ালিয়ার লোকজনের যোগাযোগ সহজ হয়েছে। আগে নদী পার হতে গিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বয়ষ্ক ও অসুস্থ রোগীদের পোহাতে হতো চরম দুর্ভোগ। এখন সেতু হওয়ায় তাদের কষ্ট লাঘব হবে।
বিগত পঞ্চশ বছর ধরে স্থানটিতে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিল এলাকাবাসী। কিন্তু তাদের দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। পুরো ইউনিয়ন জুড়ে নেই পাকা রাস্তা, সেতু ও কালভার্ট। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় পিছিয়ে। অথচ মৎসচাষ, পল্ট্রি ও ডেইরী ফার্মের জন্য সম্ভাবনাময় এলাকাটি। রায়পুরায় প্রথম চরআড়ালিয়া শুরু হয় ভাসমান মাছচাষ। এই পদ্ধতিতে মাছ চাষে সফলতা পেলেও দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ন্যায মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় মৎসচাষীরা।
তাঁরা মনে করেন, রাস্তাঘাট ও সেতু নির্মাণ হলে মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। বেকারত্বের হার কমবে এবং মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে। চরআড়ালিয়ায় পাকারাস্তা ও সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
চরআড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাসানুজ্জামান সরকার বলেন, অবহেলিত একটি জনপদ চরআড়ালিয়া। চলাচলের জন্য এখানে নেই পাকা সড়ক ও সেতু। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায়ও পিছিয়ে ইউনিয়নবাসী। বর্ষা ও শুষ্ক দুটি মৌসুমে চলাচলের একমাত্র মাধ্যম নৌকা।
তিনি আরো বলেন, এলাকাবাসীর নিজের টাকায় ও স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সেতুটি নির্মিত হওয়ায় মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে। স্থানটিতে একটি পাকা সেতু নির্মাণে স্থানীয় সাংসদ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বাংলা৭১নিউজ/সর