বাংলা৭১নিউজ,মোঃ মনজুর-ই-মওলা সাব্বির, নাটোর প্রতিনিধি: স্বাধীনতার ৪৭ বছর পার হলেও বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাচ্ছে না নাটোরের শহীদ আমিরুল ইসলাম বাবুল। সোমবার সকাল ১০টায় নাটোর প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে তাঁকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির দাবী জানাতে এক সংবাদ সম্মেলন করে তার পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তৎকালীন নাটোর পৌরসভা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক ও নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর ছাত্র আমিরুল ইসলাম বাবুল নাটোরের ওয়ালিয়ার প্রতিরোধ যুদ্ধ এবং ময়নার যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। ভারতে যুদ্ধ প্রশিক্ষণে যাওয়ার আগে নাটোর শহরে অবস্থানরত অসুস্থ্য মা’কে দেখতে এসে বাবুল পাক হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। খবর পেয়ে ট্রাফিক পুলিশে কর্মরত তাঁর বাবা আব্দুর রশীদ খান ফুলবাগানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে ছেলের সন্ধানে যান। ১৯৭১ এর ৩০ এপ্রিল বাবুল ও তাঁর বাবাকে হানাদার বাহিনী বেয়নেট চার্জে হত্যা করে উভয়ের মরদেহ ফুলবাগান গণকবরে ফেলে রাখে।
স্বাধীনতার পরে ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নাটোরে আসলে বাবুলসহ মোট চারজনকে নাটোরের প্রথম শহীদ হিসেবে ঘোষণা করেন। ঐ সময় নাটোর টাউন পার্কের নাম বদলে শহীদ বাবুল পার্ক করা হয়। দুঃখের বিষয় শহীদ বাবুলকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আজো স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। অবিলম্বে তাঁর নাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভূক্তির দাবী জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। নাটোর শহরের ৪ বীর শহীদ রেজা, রঞ্জু, সেলিম ও বাবুলের কবরে প্রতিবছর বিজয় ও স্বাধীনতা দিবসে স্থানীয় প্রশাসন শ্রদ্ধা জানায়। ৪ বীরের মধ্যে রেজা, রঞ্জু, সেলিমকে শহীদের মর্যাদা দেওয়া হলেও বাবুলকে দেওয়া হয়নি মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শহীদ বাবুলের চার ভাই সজল খান, নজরুল খান, রবিউল খান ও মামুনুর রশীদ খান, ভগ্নিপতি যুদ্ধকালীন ও বিএলএফ কমান্ডার শেখ মোঃ আলাউদ্দিন এবং ভাগ্নি রুখসানা পারভীন।
এব্যাপারে নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন জানান, বাবুল প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তার জনশ্রুতি রয়েছে। শহীদ বাবুলকে প্রতিবছর শ্রদ্ধা জানায় জেলা প্রশাসন। তবে শহীদ বাবুলের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভূক্তি কেন হয়নি সে বিষয়ে তিনি অবগত নন। তিনি আরো জানান, এব্যাপারে শহীদ বাবুলের পরিবার যোগাযোগ করলে সর্বাত্মক সহযোগীতা করা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস