বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা:
স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৩৭২ কোটি কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, এ থেকে সরকার এক হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সরকারদলীয় এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী সংসদে এই তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
অর্থমন্ত্রী জানান, ১৯৭১-৭৫ সময়ে দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা, ১৯৭৬-১৯৮০ সালে ৫০ কোটি ৭৬ লাখ, ১৯৮১-১৯৯০ পর্যন্ত সময়ে ৪৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, ১৯৯১-১৯৯৬ সালে ১৫০ কোটি ৭৯ লাখ, ১৯৯৭-২০০০ সালে ৯৫০ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ২০০১-২০০৬ সালে ৮২৭ কোটি ৭৪ লাখ, ২০০৭-২০০৯ সালে (সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার) নয় হাজার ৬৮২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, ২০০৯-২০১৩ সময়ে এক হাজার ৮০৫ কোটি টাকা এবং ২০১৩ থেকে এখন পর্যন্ত ৮৫৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়।
একেএম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান আয়কর আইন অনুযায়ী বাণিজ্যিকভাবে সব কিন্ডারগার্টেন, কেজি স্কুল বা মাদ্রাসাগুলোর অর্জিত আয় করযোগ্য। অন্যান্য করযোগ্য প্রতিষ্ঠানের মতো এসব প্রতিষ্ঠানের কর পরিগণনা করে রাজস্ব আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়া করযোগ্য আয় রয়েছে এ রকম নতুন কিন্ডারগার্টেন, কেজি স্কুল বা মাদ্রাসাসমূহ শনাক্তকরণের মাধ্যমে করনেটে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্দেশে নিয়মিত জরিপকাজ অব্যাহত রয়েছে।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের পিনু খানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে (জুলাই-এপ্রিল) ব্যাংকিং চ্যানেলে ৮১ হাজার ১০৮ কোটি টাকা রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ হাজার ৭৩৫ টাকা কম। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ চার হাজার কোটি টাকা।
এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, গত ৩০ জুন ২০১৬ সময়ে সরকারি খাতের বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর লোকসানি শাখা ছিল এক হাজার ৪০ টি। মোট শাখা পাঁচ হাজার ১২৭ টি।
পিনু খানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত দেশে আয়কর উপযোগী (টিআইএনধারী) ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৯ লাখ তিন হাজার ৫৯৪ জন। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে প্রায় ১৫ লাখ ৫২ হাজার ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান আয়কর দিয়েছেন।
সরকারদলীয় আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানান, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত দেশে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা ১৩ কোটি ৩১ লাখ ১৪ হাজার ২০৬ জন। এর মধ্যে রবি+এয়ারটেলের গ্রাহক তিন কোটি ৭৫ লাখ ২৮ হাজার ৫৬৩, বাংলালিংকের গ্রাহক তিন কোটি ১৩ লাখ ৪৮ হাজার ৮৪৯ জন, গ্রামীণ ফোনের ছয় কোটি চার লাখ ছয় হাজার ২৭১ জন এবং টেলিটকের ৩৮ লাখ ৩০ হাজার ৫২৩ জন।
সরকারি দলের নজরুল ইসলাম বাবুর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, টেলিটকের নেট্ওয়ার্ক বেসরকারি কোম্পানির তুলনায় বিস্তৃত না হওয়ায় তুলনামূলকভাবে এর গ্রাহক কম। টেলিটকের গ্রাহক বাড়ানোর উদ্যোগ নেই তা ঠিক নয়। গ্রাহক বাড়াতে টেলিটকের বিভিন্ন উদ্যোগ তিনি তুলে ধরেন।
অনলাইন পণ্য বিপণন সংস্থা আমাজন ও আলীবাবার সঙ্গে ডাক বিভাগের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
কামাল আহমেদ মজুমদারের প্রশ্নের জবাবে তারানা হালিম বলেন, “ডাক বিভাগ কর্তৃক ই-কমার্স চালু করার জন্যwww. dakbazar. com ওয়েব সাইট প্রস্তুত করা হয়েছে, যা বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ওয়েব পেজে সঙ্গে সংযোগ প্রদানের কাজ বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সংযোগ প্রদানের পর সার্বিকভাবে বাণিজ্যিকীকরণ করা হবে। ”
“এ ছাড়া ই-কমার্স সেবাকে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে সঙ্গে সংযোজনের লক্ষ্যে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ইলেকট্রনিক পেমেন্ট গেটওয়ে মাস্টারকার্ড এবং ই-কমার্স জায়ান্ট আমাজন ও আলীবাবা ডটকম এর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ”
এম এ আউয়ালের প্রশ্নের জবাবে তারানা হালিম বলেন, “ক্ষতিকর ওয়েবসাইটে প্রবেশ ঠেকানোসহ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি নিশ্চিতকল্পে ইন্টারনেট সেফটি সলিউশান কেনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে গত ২৮ মে পর্যন্ত মোট ৩৩০টি অভিযোগ বিটিআরসি কর্তৃক ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। ফেসবুক ১১৭টি অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস