সম্পদের হিসাব দিতে চকরিয়া-পেকুয়া (কক্সবাজার-১) আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম ও তার স্ত্রী-সন্তানদের তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ২৪ আগস্ট কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন তাদের আলাদা চিঠি পাঠান। চিঠিতে এমপি জাফর আলম, তার স্ত্রী শাহেদা বেগম, ছেলে তুহিন আলম ও মেয়ে তানিয়া আফরিনকে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর দুদক কক্সবাজার কার্যালয়ে হাজির হয়ে সম্পদের হিসাব দিতে বলা হয়েছে।
দুদকের সমন্বিত কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আগামী রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে জাফর-শাহেদা দম্পতি ও তাদের দুই সন্তানকে দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে নিজেদের সম্পদের বিবরণ দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুদকের নোটিশে সংসদ সদস্য জাফর আলমের ক্ষমতা ও প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে স্ত্রী শাহেদা বেগম সরকারি জমি, চিংড়ি ঘের, জলমহাল দখল, মাদক কারবার, চাঁদাবাজি এবং অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ আনা হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হলেও দীর্ঘদিন কর্মক্ষেত্রে তাঁর অনুপস্থিত থাকার কথাও উল্লেখ করা হয়।
তবে শাহেদা বেগম এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তার বিরুদ্ধে দুদকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। স্কুলে অনুপস্থিতি থাকলেও তিনি একজন প্যারা টিচার নিয়োগ দিয়েছেন। বরং অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি দাবি করে বলেন, একজন নারীর পক্ষে সরকারি জমি, চিংড়ি ঘের, মাদক কারবার, চাঁদাবাজি করা কী কখনো সম্ভব?
স্ত্রী ও সন্তানদের সম্পদের অনুসন্ধানকে ‘চিহ্নিত মহলের ষড়যন্ত্র’ দাবি করে সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেছেন, দুদকের তদন্তে তার পরিবার পূর্ণ সহযোগিতা করবে।
এর আগে, গত ২১ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক খান মো. মাজানুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক স্মারকে সংসদ সদস্য জাফর আলমের স্ত্রী শাহেদা বেগমের সম্পদ তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই স্মারক সূত্রে উল্লেখ করা হয়, শাহেদা বেগমের বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখল, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি এবং অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদক সমন্বিত কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরই প্রেক্ষিতে এমপির পরিবারকে সম্পদের বিবরণ দিতে ৪ সেপ্টেম্বর ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ