বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক: ফিলিস্তিন থেকে উদ্বাস্তু হয়ে লেবাননে বসবাস করছে এমন তিন লাখ ফিলিস্তিনির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সৌদি আরব।
ফিলিস্তিন ইনস্টিটিউশন ফর হিউম্যান রাইটস এর বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা।
লেবাননে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের পাসপোর্ট না থাকায় তাদের ভিসা বন্ধ করে দেয়ার এ নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
ফিলিস্তিন ইনস্টিটিউশন ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, লেবাননে অবস্থিত সৌদি দূতাবাস ট্রাভেল এজেন্টদের এই বিষয়ে অবহিত করেছে।
দূতাবাস জানিয়েছে, যাদের ফিলিস্তিনি পাসপোর্ট নেই তাদের আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
সৌদির এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় মানবাধিকার গোষ্ঠীটি জানায়, সৌদি আরবের এই আকস্মিক সিদ্ধান্তে তারা উদ্বিগ্ন। এই বিষয়ে বৈরুতে ফিলিস্তিনি দূতাবাস সৌদি আরবের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা পায়নি।
তবে পাসপোর্ট না থাকা ব্যক্তিদের ভিসা না দেখার ঘোষণা দিলেও এ বছর হজের সময় জর্দানে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের পাসপোর্ট থাকার পরেও ভিসা দেয়নি সৌদি কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহায়তা কমিয়ে দেওয়ায় নতুন করে দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে লাখো ফিলিস্তিনি। মার্কিন তহবিল নিয়ে ফিলিস্তিনিদের জন্য সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোও পড়েছে অনিশ্চয়তায়।
জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী স্বীকৃতি দেওয়ার পর ফিলিস্তিনের সাথে সম্পর্কের অবনতি হলে ধারাবাহিকভাবে গাজা ও পশ্চিম তীরে তহবিল বাতিল করে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী সংস্থা থেকে আগেই ৬৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ প্রত্যাহার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
জুনে ফিলিস্তিনিদের আরেকটি সহযোগিতা বাতিল করা হয়। সর্বশেষ ২৪ আগস্ট ফিলিস্তিনের গাজা ও পশ্চিম তীরের জন্য বরাদ্দকৃত আর্থিক সহযোগিতা থেকে ২০ কোটি ডলারের বেশি তহবিল বাতিল করার নির্দেশ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ফিলিস্তিনে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনাকারী একটি সংস্থা হলো ক্যাথলিক রিলিফ সার্ভিসেস। তারা মার্কিন তহবিলের সহায়তায় গাজায় খাদ্য সহায়তায় ও কর্মসংস্থানমূলক প্রকল্প পরিচালনা করে থাকে।
সংস্থাটি জানায়, জানুয়ারি মার্কিন সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আগে যেখানে তারা দেড় লাখ ফিলিস্তিনিকে সহায়তা দিতে পারতো; তা কমে এখন মাত্র ২০০ তে দাঁড়িয়েছে। অনেক কর্মীকে বাদ দিতে বাধ্য হয়েছে তারা।
মার্কিন সহায়তা কমিয়ে দেওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে মার্সি কর্পস ও ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কর্পস (আইএমসি)ও। মার্কিন তহবিল দিয়ে এ সংস্থাগুলো যৌথভাবে গাজায় চিকিৎসা কর্মসূচি পরিচালনা করতো। গাজার আর্দ এল ইনসান ক্লিনিকের চিকিৎসক ও ব্যবস্থাপক সাফা ইসলিম বলেন, ‘আমাদের ওপর বাজেভাবে প্রভাব পড়েছে।
এখানে আইএমসির তহবিলে একটি প্রকল্প চলছিলো যা পাঁচ বছর পর্যন্ত চলার কথা ছিল। এর সহায়তায় আমরা অপুষ্টি, শারীরিক ভঙ্গুরতা, রিকেটস, অ্যানিমিয়া মোকাবিলায় কাজ করতাম।
গত বছর শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী ৬ হাজার রোগির জন্য এ প্রকল্প শুরু হয়েছিল। আমিসহ প্রধান কর্মীদের বেতন ৫০ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রকল্প ছিল। আমরা কর্মঘণ্টা কমিয়ে নিয়েছি।’ সূত্র: এরাবিয়ান জার্নাল।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস