বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসম্বলিত স্থান সংরক্ষণ করা হচ্ছে। যে স্থান থেকে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, যে স্থানে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী নিঃশর্ত আত্মসমর্পন করেছিল, সেই স্থানটির স্মৃতিও মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। সরকার সেইসব স্থানের উন্নয়নে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে। একইসাথে গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হবে।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স কক্ষে মুক্তিযোদ্ধা একাডেমি ট্রাস্টের এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এ তথ্য জানান। মুক্তিযুদ্ধকালে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে পরাজিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন অপসারণ ও উদ্ধার অভিযান ১৯৭২-১৯৭৪ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্রের প্রিমিয়ার শো এবং বাংলাদেশ-রাশিয়া ফেন্ডশিপ: এ ট্রাস্টেড জার্নি অব হান্ড্রেড ইয়ার শীর্ষক আলোকচিত্র অ্যালবামের প্রকাশনা উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার প্রায় ৪৭ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভুমিতে স্মৃতিস্তম্ভ না হওয়া খুবই দুঃখজনক। এখনও সারাদেশে বধ্যভুমি চিহ্নিত করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাসমূহ বর্তমান প্রজন্মকে জানাতে হলে অতিদ্রুত এসব স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যবহার উপযোগী করার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন সেদিন যে সহযোগিতা দিয়েছিল তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সোভিয়েত ইউনিয়ন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বাংলাদেশের প্রশ্নে বার বার ভেটো দিয়ে যে সহযোগিতা ও প্রেরণা যুগিয়েছে, সেজন্য বাঙালি জাতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয় যে, পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যখন বুঝতে পারে যে, সমুদ্রপথে তারা পালাতে পারবে না। তাদের পরাজয় অনিবার্য, তখন হাজার হাজার মাইন চট্টগ্রাম বন্দর ও উপকূল এলাকায় পুঁতে রাখে। বঙ্গবন্ধু রাশিয়া সফরকালে তৎকালিন সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভের কাছে এ মাইন অপসারণে সহযোগিতা চান। সোভিয়েত ইউনিয়নের ৩৭টি যুদ্ধ জাহাজ এক হাজার দুই বর্গকিলোমিটার এলাকায় পুঁতে রাখা মাইন ২৭ মাসে অপসারণ করে। এ অভিযানে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রায় ২০ জন নৌসেনা মৃত্যুবরণ করে।
মুক্তিযোদ্ধা একাডেমি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ড. আবুল আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ঢাকাস্থ রুশ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের পরিচালক আলেক্সান্ডার পি ডমিন (গৎ. অষবীবহফবৎ চ. উধসরহ), সাবেক সংস্কৃতি সচিব ও প্রধান তথ্য কমিশনার কবি আজিজুর রহমান আজিজ, অর্থনীতিবিদ-গবেষক ড. আনু মাহমুদ, প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের পরিচালক ইব্রাহিম আজাদ, আল-আরাফাহ ইসলামি ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক হারুনুর রশীদ খান ও সাউথ এশিয়ান মিউজিক ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. শরীফ আশরাফউজ্জামান।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস