নড়াইলের তিনটি উপজেলার মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে আমন ধান। সোনালী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ফলন মোটামুটি ভালো হলেও উৎপাদন ব্যয় উঠবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন কৃষক।
এদিকে ফলন ভালো হয়েছে দাবি করে কৃষি বিভাগ বলছে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এবং কৃষক ন্যায্য মূল্য পেলে আগামিতে আমন চাষ আরও বাড়বে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার ২৬২ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৪২ হাজার ৬৮৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪২৩ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৪৮ শতাংশ জমির ধান কর্তন হয়েছে।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, আমন ধানের খেত সবুজ থেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। কৃষকরাও ফসল ঘরে তুলতে দিন-রাত কাজ করছে। কেউ ধান কাটছেন, কেউ আঁটি বাঁধছেন। কেউ কেউ সেই ধান মাথায় নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। আবার কেউ করছেন মাড়াইয়ের কাজ। সকাল থেকে দিনভর এভাবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণী।
কৃষকরা বলছেন, খরচের তুলনায় ধানের দাম কম। ফলে ধানের দাম না বাড়লে লাভ তো দূরে থাক এই দামে উৎপাদন খরচ উঠবে কি না তা নিয়ে এখন শঙ্কা।
লোহাগড়া উপজেলার কৃষক সাধন দাস, শহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন কৃষক জানান, সব কিছুর যে দাম তাতে ধানের দাম ১৫শ টাকার নিচে হলে কৃষক বাঁচবে না। যেভাবে খরচ হয়, তাতে কৃষকের বেঁচে থাকা সম্ভব না। তারপরও নিজেদের জমি চাষ না করে কি করবেন। না খেয়ে তো আর মরা যায় না। তাই বাধ্য হয়ে লোকসান হলেও চাষ করা লাগে।
নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রোকনুজ্জামান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা আগ্রহের সাথে রোপা আমন চাষ করেছে। তুলনামূলক রোগবালাই এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। প্রতিটা স্তরে যদি উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং কৃষক যদি যথাযথ মূল্য পায় তাহলে নড়াইলসহ সারাদেশে রোপা আমনের আবাদ বাড়বে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস