খুলনা জেলা প্রশাসন পরিচালিত সৈয়দপুর ট্রাস্ট এস্টেটের প্রায় ৪০ লাখ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। জেলা প্রশাসকের সই জাল করে রাজস্ব বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারী দুটি ব্যাংক থেকে ১১টি চেকের মাধ্যমে এ টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চলতি মাসের ৪ সেপ্টেম্বর বিষয়টি ধরা পড়লে খুলনা সদর থানায় প্রাথমিকভাবে একাধিক জিডি করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দানবীর হাজী মুহম্মদ মুহসীনের সব সম্পদ দিয়ে সৈয়দপুর ট্রাস্ট গঠিত। জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে স্টেটের প্রধান। রাজস্ব বিভাগ ট্রাস্টের সম্পদ দেখাশোনা করে। এর অর্থ দিয়ে গরিব শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, দুস্থদের সহযোগিতাসহ সেবামূলক কাজ করা হয়।
নগরীর এনআরবিসি ও ইসলামী ব্যাংকে ট্রাস্টের দুটি অ্যাকাউন্ট আছে। ৪ সেপ্টেম্বর ট্রাস্টের ব্যাংক হিসাব পরীক্ষণের সময় অসামঞ্জস্য ধরা পড়ে। যাচাইয়ের পর স্বাক্ষর জাল করে প্রায় ১০ লাখ টাকা উত্তোলনের বিষয়টি ধরা পড়ে।
২০২২ সালের ৭ এপ্রিল থেকে গত ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১টি চেকে এ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরির পাশাপাশি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইউসুফ আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান আল মামুন বলেন, সরকারি অর্থ আত্মসাতের মামলা দুদকে করতে হয়। জেলা প্রশাসনের অভিযোগ জিডি হিসেবে দুদকে পাঠানো হয়েছে। দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, মামলা গ্রহণের জন্য প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি নিতে হয়। খুব শিগগির অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হবে।
দীর্ঘদিন ফান্ডের অডিট না হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র এ অর্থ তুলতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসিন আরেফীনের। তিনি বলেন, এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করবে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শুধু আমার সময়েই নয়, আগে যারা জেলা প্রশাসক ছিলেন তাদেও সইও জাল করা হয়েছে। আর কে বা কারা জড়িত, তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‘যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে তিনি এখনো চাকরিতে বহাল আছে। তদন্তে প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। এছাড়া আরও যারা এর সাথে জড়িত আছেন, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।’ যোগ করেন জেলা প্রশাসক।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ