বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা : কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলাকারী শরিফুল ইসলাম ওরফে সোহান সুস্থ হয়ে উঠছেন। পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার পর থেকে র্যাবের হেফাজতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তার। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শরিফুলের অবস্থা এখন উন্নতির দিকে।
ময়মনসিংহে র্যাব ১৪ ব্যাটালিয়নের সিনিয়র সহকারী পরিচালক শামিম আরা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘শরিফুলের বুকে গুলি লেগেছিল। এখন সে কিছুটা সুস্থ। পুরোপুরি সেরে উঠলেই হাসপাতাল থেকে নিয়ে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে’।
তবে এরই মধ্যে শোলাকিয়া হামলার বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছেন শরিফুল। কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা করার সময় তিনি জানান, এক ওস্তাদের নির্দেশে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে হামলা করতে গিয়েছিলেন তারা। মোট পাঁচ জনের দল থাকলেও তিন জন আগেই পালিয়ে যায়। তবে শরিফুল ও নিহত আবীর হামলা করতে একাট্টা ছিলেন।
জঙ্গি নির্মূলের চেষ্টায় শরিফুলকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবেই দেখছে র্যাব। তার মাধ্যমে হামলার নির্দেশদাতা ওস্তাদকে গ্রেপ্তার, তাদের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে বলে আশা করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীটি।
হামলার দুইদিন পরে শোলাকিয়া পরিদর্শনে গিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক জানান, শরিফুলের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাইবাছাই করা হচ্ছে। শরিফুল ও আবীর নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য।
আটক শরিফুল ইসলাম সোহান প্রায় আড়াই বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন। তাদের বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট এলাকায়। সোহানের গোটা পরিবার জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িত। শরিফুলের বাবা পেশায় রেডিও-টিভি’র ইলেক্টট্রিক মিস্ত্রি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সহিংসতার ঘটনায় করা একাধিক মামলার আসামি হওয়ায় তিনি নিজেও বাড়িতে থাকেন না। ঈদের দিন শোলাকিয়া ময়দানের অদূরে দুই পুলিশকে হত্যার পর শরিফুলের আটক হওয়ার খবরে আত্মগোপন করেছেন তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও।
আর ওই হামলার পর পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারানো আবীর রহমান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তিনি গত মার্চ থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
নর্থ সাউথের শিক্ষার্থীর সঙ্গে মাদ্রাসা পড়–য়া শরিফুলের পরিচয় কীভাবে, কোথায় তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, কিশোরগঞ্জে আসা অন্য তিন সহযোগী কারা, সেসব বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত ঈদের দিন সকালে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ময়দানের অদূরে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে এক পুলিশ সদস্য চারজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আটক শরিফুল এবং ঢাকার তেজগাঁও কলেজের ¯স্রাতক সম্মান বিভাগের ছাত্র জাহিদুল হক ওরফে তানিমকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস