বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন, একুশে পদকপ্রাপ্ত ও দেশের অন্যতম সেরা মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালের চেম্বারে রোগী দেখছেন না। তিনি এখন ঠিকানা বদলে গ্রিন লাইফ হাসপাতালে রোগী দেখছেন।
সম্প্রতি সেন্ট্রাল হাসপাতালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে ভাঙচুর , চিকিৎসকদের মারধর, গ্রেফতার ও অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহসহ নয়জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলাসহ বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আপাতত ওই হাসপাতালে রোগী না দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এ বি এম আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, চিকিৎসক, নার্সসহ চিকিৎসা সেবা প্রদানের সঙ্গে জড়িত সকলের ও রোগীদের স্বার্থে একটি শক্তিশালী আইন হওয়া প্রয়োজন। সরকারের এ ধরনের একটি আইন প্রণয়নের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে জানিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ওই আইনটির ব্যাপারে তিনি ব্যক্তিগতভাবে কিছুই জানেন না।
তিনি বলেন, সঠিক আইন প্রণয়ন করতে হলে বিএমএ, স্বাচিপ, সচেতন নাগরিক সমাজের পাশাপাশি দেশের চিকিৎসাপেশার সঙ্গে জড়িত সিনিয়রদের মতামত গ্রহণ করে আইনটি করা উচিত। প্রতিবেশি দেশ ভারতে এ ধরনের আইন রয়েছে বলে তিনি জানান।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ দীর্ঘদিন যাবত সেন্ট্রাল হাসপাতালে চেম্বারে রোগী দেখলেও সম্প্রতি ঘটনার পর বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) শীর্ষ নেতাদের অনুরোধে তিনি সেখানে রোগী দেখা থেকে বিরত আছেন।
জানা গেছে, শীর্ষ নেতারা তাকে বলেছেন, সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিএমএ’র পরামর্শ না শুনে নিজেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা করেছেন। তাদের এই সমঝোতার কারণে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে বিএমএ’র প্রচেষ্টা ব্যহত হয়েছে।
সূত্র জানায়, সেন্ট্রাল হাসপাতালের ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক নেতাদের মধ্যে বিভাজন হয়েছে। বিএমএ’র সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে সরকার দলের অনুসারি একটি গ্রুপ সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেকার সমঝোতায় ভূমিকা রেখেছেন। ওই সমঝোতায় ২০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অধ্যাপক আবদুল্লাহর সেন্ট্রাল হাসপাতালে রোগী দেখা ও না দেখা নিয়েও চিকিৎসকদের পক্ষে বিপক্ষে মতামত প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার পাশে আন্তরিকতা নিয়ে দাঁড়ায়নি। তিনি আদালতে জামিন নিতে গেলেও চিকিৎসকদের অনেকে সাথে যাননি।
বিএমএ’র অনুরোধে চেম্বারের ঠিকানা বদল করেছেন কিনা জানতে চাইলে ডা. আবদুল্লাহ বলেন, সম্প্রতি সেন্ট্রাল হাসপাতালে উদ্ভুত ঘটনার পর বিএমএ নেতারা তাকে বিষয়টির সুষ্ঠু সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত সেন্ট্রাল হাসপাতালে রোগী দেখতে না যেতে অনুরোধ করেন। তাদের অনুরোধেই তিনি ঠিকানা বদলে আপাতত গ্রিন লাইফ হাসপাতালে রোগী দেখছেন। তিনি চিকিৎসাসেবা সংশ্লিষ্ট সকলের স্বার্থে একটি সঠিক আইন প্রণয়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেন।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস