সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে ২১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকলো শেয়ারবাজার।
এর আগে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবস এবং তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস মূল্য সূচক বাড়ে। এতে টানা ছয় কার্যদিবসের উত্থানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সাড়ে ছয় হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়।
টানা উত্থানের প্রভাবে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক সাড়ে ছয় হাজার পয়েন্ট ছাড়ানোর পর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার দরপতন হয় শেয়ারবাজারে। পরের কার্যদিবস সোমবারও পতনের মধ্যেই থাকে শেয়ারবাজার।
তবে মঙ্গলবার আবার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে শেয়ারবাজার। আর বুধবার সূচকের বড় উত্থান হওয়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক আবার সাড়ে ছয় হাজার পয়েন্টের ওপরে উঠেছে।
এদিন লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
এমনকি লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের শেষ দিকে এসে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ বিক্রির চাপ বাড়ায়। এতে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। ফলে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছুটা কমে। অবশ্য এর মধ্যেও বড় মূলধনের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ে। ফলে সূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
বড় মূলধনের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসই আগের দিনের তুলনায় ৭৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫৪৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। বাকি দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৫৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৪২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সূচক বাড়লেও ডিএসইতে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। বাজারটিতে সব খাত মিলে ১৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৫টির। আর ৯২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হলেও বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১৯৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৩১৫ কোটি ৪ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৮৭৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ২৩০ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ১৫১ কোটি ২৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১০৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- নাহি অ্যালুমিনিয়াম, জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, বেক্সিমকো ফার্মা, ইস্টার্ন হাউজিং, একমি ল্যাবরেটরিজ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এবং মালেক স্পিনিং।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২০৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৮৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১২টির এবং ৬৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ