বাংলা৭১নিউজ,( শরীয়তপুর)প্রতিনিধি: পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে নদীর তলদেশ থেকে জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক সরে যাওয়ার কারণে পদ্মা নদীর তলদেশে গর্ত হয়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঐতিহাসিক সুরেশ্বর দরবার শরীফ রক্ষাবাঁধের প্রায় ৬০ মিটার পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। দরবার শরীফ ও আশপাশের লোকজন ভাঙনের ভয়ে আতংকে আছেন বলে জানিয়েছে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সরেজমিন সুরেশ্বর এলাকার স্থানীয় তাজেন নেছা ও মজিবর রহমান বয়াতি জানান, পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে নদীর তলদেশ থেকে জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লক সরে গিয়ে পদ্মা নদীর তলদেশে গর্ত হয়ে সুরেশ্বর দরবার শরীফ ও আশপাশে ভাঙন শুরু হয়। ফলে ঐতিহাসিক সুরেশ্বর দরবার শরীফ রক্ষাবাঁধের প্রায় ৬০ মিটার জায়গা পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গত এক সপ্তাহ যাবত এ ভাঙন শুরু হলে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে তিনটি স্থানে প্রায় ৩ হাজার ৭শ’ জিও ব্যাগ ও ৪ হাজার সিসি ব্লক ডাম্পিং করেছে। সেখানে ডাম্পিং কাজ এখনও চলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আরও ৩০ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হবে। ২০০৭ ও ২০১২ সালে সুরেশ্বর দরবার শরীফ ও আশপাশে ভাঙন দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাঙন রোধে সুরেশ্বর দরবার শরীফ ও আশপাশে ৮৫০ মিটার স্থায়ী রক্ষাবাঁধ নির্মাণ করা হয়।
চলতি বর্ষা মৌসুমে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ঐ বাঁধে পুনরায় ভাঙন দেখা দেয়। দরবার শরীফ ও আশপাশের লোকজন ভাঙন আতংকে রয়েছেন। সেখানের লোকজন দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছে। সারাক্ষণ আতংকের মধ্যে দিন পার করছেন। অনেকেই একাধিকবার ভাঙনের কবলে পড়ে ভিটেমাটি সহায়-সম্বল হারিয়ে নতুন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।
ভাঙনকবলিত লোকজন পদ্মার পাড়ে বসে পদ্মা নদীর উত্তাল ঢেউ দেখছেন। তারপরও ভয়ভীতি উপেক্ষা করে নিজের ভিটায় বসে আছেন। ডাম্পিং করে ভাঙন রোধ করতে না পারলে সুরেশ্বর দরবার শরীফ ও বহু বাড়িঘর ও স্থাপনা পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। তাই ওই এলাকায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য স্থানীয়রা সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
সুরেশ্বর এলাকার ইলিয়াছ খান বলেন, এ পর্যন্ত ভাঙনের কারণে আমার বাড়িঘর পাঁচবার বিলীন করে নিয়েছে পদ্মা। নতুন করে সুরেশ্বর এলাকায় বাড়ি করে বসবাস করছি। এটুকু নিয়ে গেলে কোথায় যাব কী করব জানি না। ভাঙন রোধ করতে না পারলে এই এলাকা পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে।
সুরেশ্বর দরবার শরীফের প্রধান মুত্তালি সৈয়দ শাহ সুফী কামাল নুরী বলেন, গত কয়েক বছর বেড়িবাঁধের জন্য আমরা শান্তিতে ছিলাম। পদ্মার ভাঙনে দরবার শরীফ এলাকায় বেড়িবাঁধের কিছু অংশ বিলীন হয়ে গেছে। আমরা আতংকে আছি। শেষ রক্ষা হবে কিনা জানি না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল হেকিম বলেন, ভাঙন রোধে গত কয়েক দিনে জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লক ডাম্পিং কাজ চলছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩৭ হাজার জিও ব্যাগ ও ৪ হাজার সিসি ব্লক ডাম্পিং করা হয়েছে। ডাম্পিং কাজ চলমান রয়েছে। শুকনো মৌসুমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস