বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: ভাগ্যই বোধ হয় মঞ্চ প্রস্তুত করেই রাখে! সুযোগ কাজে লাগানোর দায়িত্বটুকু শুধু খেলোয়াড়ের। সাকিব আল হাসানের চোটে ‘পড়ে পাওয়া অধিনায়কত্ব’ পেয়ে সেই মঞ্চ রাঙিয়ে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। পরশু মুশফিকুর রহিম তো বলেই গেছেন, চট্টগ্রাম টেস্টে তাঁর সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। আট বছরের মধ্যে টেস্টে অধিনায়কত্বের অভিষেকে সর্বোচ্চ ইনিংস এসেছে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে। বাড়তি এই দায়িত্বটা ঢাকা টেস্টেও থাকবে মাহমুদউল্লাহর প্রেরণা হয়ে, ‘আমি সব সময় বলি, এই জিনিসটা (অধিনায়কত্ব) পছন্দ করি। চ্যালেঞ্জটা নিতে ভালো লাগে। হয়তো পরোক্ষভাবে এটা (অধিনায়কত্ব) আমাকে সাহায্য করছে। তবে আমার মূল কাজ দলের জন্য রান করা, ওটাই করব।’
সাকিব না থাকায় নেতৃত্বের দায়িত্বটা তাঁর কাঁধে চেপেছে। কিন্তু সেই দায়িত্ব নিয়েও মাহমুদউল্লাহ সবচেয়ে বেশি টের পাচ্ছেন সাকিবের অভাবই, ‘সত্যি কথা বলতে, সাকিবের অভাব পূরণ করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। ও আমাদের বড় চালিকাশক্তি। ওর কারণে দলের ভারসাম্য থাকে। কারণ সে একই সঙ্গে বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান ও বিশ্বমানের বোলার। সব দিক থেকে পরিপূর্ণ খেলোয়াড়।’ বোলার সাকিবের অভাব পূরণের জন্য মাহমুদউল্লাহ তাকিয়ে আছেন দলের বাকি স্পিনারদের দিকে, ‘আমাদের যে স্পিন আক্রমণ, সেটার ওপর আমার আস্থা আছে। হয়তো তার অভাবটা পূরণ করতে পারব।’
মাহমুদউল্লাহর ঠিক আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে শ্রীলঙ্কাকে ওয়ানডের চেয়ে টেস্টে শক্তিশালী দাবি করে গেছেন দিনেশ চান্ডিমাল। তবে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দ্বৈরথে নিজেদেরই এগিয়ে রাখছেন স্বাগতিক অধিনায়ক, ‘আমার মনে হয়, আমাদের দল ভালো। আমরা সব সময় বিশ্বাস করি, ঘরের মাঠে আমরা ভালো দল। যদি আমাদের সামর্থ্যে অনুযায়ী খেলতে পারি, মনে হয় খুব ভালো লড়াই হবে। চট্টগ্রাম টেস্টেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। যদিও বোলাররা তাদের সামর্থ্য ওইভাবে দেখাতে পারেনি। তবু ওটা ভালো টেস্ট ছিল।’
কিন্তু এই ড্র করে সন্তুষ্টি আর কত? সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ জয় সেই ২০১৪ সালে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এবার কি সেই খরা কাটানোর সুযোগ এল? মাহমুদউল্লাহ বলছেন, ‘অবশ্যই। প্রথম ম্যাচে আমরা যে অবস্থানে ছিলাম, অনেকটা কঠিন পরিস্থিতি থেকে ড্র করেছি ম্যাচটা। এবার আমাদের জন্য দারুণ একটা সুযোগ। সব খেলোয়াড়ই ইতিবাচক চিন্তা করছে। এই চিন্তাটা মাঠে কাজে লাগাতে পারলেই ভালো ফল আসবে।’
মিরপুর টেস্ট হার-জিত দেখবে, এই বিশ্বাসের কথা বলে গেলেন মাহমুদউল্লাহ। যেটা না বলে সযতনে তুলে রাখলেন, তা হলো—একাদশ কেমন হতে চলেছে। ওই সিদ্ধান্তটা আরও ভেবেচিন্তে নিতে চায় বাংলাদেশ, ‘ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলে সেরা একাদশটা ঠিক করব। ওদের সম্ভাব্য দল কী হতে পারে, এসব বিবেচনায় থাকবে। আসলে এটা নিয়ে আমরা এখনো চিন্তাভাবনা করছি।’
গণমাধ্যমের সঙ্গে কাল যখন কথা বলছিলেন, তার আগে উইকেট দেখে এসেছেন মাহমুদউল্লাহ। স্পিনাররা সহযোগিতা পাবেন বলেই মনে করছেন তিনি। এটা অধিনায়ককে একটু সাহসও দিচ্ছে। কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন শ্রীলঙ্কা, সেই সাহসের উল্টো পিঠেই শঙ্কারও বসবাস। যে শঙ্কার নাম রঙ্গনা হেরাথ, দিলরুয়ান পেরেরা। তবে নিজেদের ব্যাটসম্যানদের ওপরও যথেষ্ট আস্থা আছে বাংলাদেশ অধিনায়কের, ‘হেরাথ খুব অভিজ্ঞ, দিলরুয়ানও খুব ভালো বোলার। ওদের সামর্থ্য আছে ব্যাটসম্যানদের ভোগান্তিতে ফেলার। কিন্তু আমার মনে হয় একই সঙ্গে আমাদের ব্যাটসম্যানদের সামর্থ্যও কম নয়। দিনে দিনে আমাদের ব্যাটিং ইউনিট আরও ভালো হচ্ছে। সে কারণে আমরাও আত্মবিশ্বাসী।’
বিশ্বাস, কন্ডিশন আর নিকট অতীতের সাফল্য মিলে মঞ্চ প্রস্তুত মিরপুরেও। সামনের পাঁচ দিনে প্রত্যাশাটা বাস্তব রূপ দেওয়ার দায়িত্ব এখন মাহমুদউল্লাহদের।
বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: