উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের রাজধানী খার্তুমের আশপাশের এলাকায় গোলাবর্ষণে কমপক্ষে ১২০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকারীরা। সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর দেশজুড়ে সংঘাত বৃদ্ধির মাঝে সোমবার গোলাবর্ষণে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত সুদানের স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকারীদের সংস্থা ওম্বাদা ইমার্জেন্সি রেসপন্স রুম বলেছে, রাজধানীর খার্তুমের পার্শ্ববর্তী নীল নদের লাগোয়া পশ্চিম ওমদুরমান শহরে সোমবার বিক্ষিপ্তভাবে গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে সেখানকার অন্তত ১২০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
খার্তুমে সোমবারের সংঘাতে প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা ১২০ জন বলে জানিয়েছে ওম্বাদা ইমার্জেন্সি রেসপন্স রুম। তবে হামলার পেছনে কারা ছিল তা নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি সংস্থাটি।
উদ্ধারকারীরা বলেছেন, গোলাবর্ষণের কারণে স্বাস্থ্যকর্মীরা বিভিন্ন মাত্রার আঘাতে ভুগছেন এমন বিপুলসংখ্যক আহত লোকজনকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে ব্যাপক বেগ পোহাচ্ছেন। এছাড়া খার্তুমের ওই এলাকায় ওষুধসহ অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
সুদানের নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশটির সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর জেনারেলদের মাঝে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে লড়াই চলছে। ওমদুরমানের বেশিরভাগ এলাকা সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) খার্তুম উত্তর ও রাজধানীর অন্যান্য কিছু এলাকার দখল নিয়েছে।
নীল নদের উভয় তীরের বৃহত্তর খার্তুমের বাসিন্দারা নিয়মিত সেখানে গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের বোমা ও কামানের গোলার ধ্বংসাবশেষ তাদের বাড়িঘর ও বেসামরিক লোকজনের ওপর আঘাত হানছে।
তবে দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফ পরস্পরের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যকর্মীসহ বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার এবং আবাসিক এলাকায় নির্বিচারে গোলাবর্ষণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে। রোববার ওমদুরমানের ওম্বাদা এলাকার উদ্ধারকারীরা সেখানে মারাত্মক স্বাস্থ্যসেবা সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন। গত বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মাঝে ওই এলাকায় তীব্র অপুষ্টি, ম্যালেরিয়া এবং ডায়রিয়ায় ৭০ জনের বেশি মারা গেছেন।
দুই বাহিনীর মাঝে চলমান এই সংঘাত দেশটির ভঙ্গুর অবকাঠামো ধ্বংসের পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়েছে। এছাড়া এই সংঘাতে দেশটিতে এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্ত্যুচুত হয়েছেন এবং অসংখ্য মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছেন।
শুক্রবার জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বলেছে, চলতি বছর সুদানে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ৩২ লাখ শিশু তীব্র অপুষ্টির সম্মুখীন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্র: এএফপি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ