বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক: বেআইনিভাবে সিরিয়ায় হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য শুরু হয়েছে।
দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে লিখেছে, সিরিয়ায় হামলার পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। বার্তা সংস্থা ওয়াক্সের ইন্টারনেট সংস্করণে বলা হয়েছে, মার্কিন সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বুল্টনের সঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসের মধ্যেও তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়েছে। অন্যদিকে সিরিয়ার প্রতি রাশিয়ার সমর্থনের ব্যাপারে কিধরণের প্রতিক্রিয়া দেখানো যায় তা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ল্যারি কাদলুর সঙ্গে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন প্রতিনিধি নিকি হ্যালির মধ্যেও কথা কাটাকাটি হয়েছে বলে জানা গেছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সিদ্ধান্ত গ্রহণে যারা মূল ভূমিকা পালন করেছিল তারা বর্তমান বিতর্কে নিজেকে আড়াল করার পাশাপাশি ব্যর্থতার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে। সিরিয়ার দুমায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ তুলে এর জবাবে আমেরিকা ওই দেশটিতে প্রায় ১১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। কিন্তু ওই হামলার পক্ষে ব্যাপক প্রচার প্রোপাগান্ডা সত্বেও আমেরিকা ও তার মিত্ররা রাজনৈতিক ও সামরিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। হামলা চালিয়ে তারা সিরিয়াকে যতটা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে বলে ভেবেছিল তা হয়নি। মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্কার সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে লিখেছে, “বাস্তবতা হচ্ছে যুদ্ধ করে সিরিয়ার সামরিক শক্তিকে ধ্বংস করা সম্ভব নয়।”
আমেরিকা ও তার মিত্ররা সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে প্রথম যে সমস্যায় পড়েছে তা হচ্ছে এ পদক্ষেপের জন্য তারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছ থেকে অনুমতি নেয়নি। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কংগ্রেসেরও অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। অথচ জাতিসংঘের সদস্য কোনো দেশের ওপর হামলা চালানোর আগে অবশ্যই নিরাপত্তা পরিষদের অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী কোনো দেশের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার আগে কংগ্রেসের অনুমতি নেয়াও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব।
সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে আমেরিকা দ্বিতীয় যে সংকটে পড়েছে তা হচ্ছে, এর ফলে তারা সিরিয়ার সামরিক শক্তির এমন কোনো ক্ষতি করতে পারেনি যাতে সন্ত্রাসীরা লাভবান হতে পারে। অর্থাৎ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে তারা সিরিয়া সরকারের কোনো ক্ষতি করতেতো পারেনি বরং আমেরিকার ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে এবং পরবর্তীতে তারা দামেস্কের বিরুদ্ধে আরো বড় ধরণের হামলা চালানোর ব্যাপারে হতাশ হয়ে পড়েছে। এমনকি আমেরিকা ও তার মিত্রদের হামলায় সিরিয়ার একটি সেনাও নিহত হয়নি। এ থেকে বোঝা যায় আমেরিকা দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং সিরিয়া ইস্যুতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখার ক্ষমতা তাদের নেই।
আমেরিকার এই ব্যর্থতা এবং দেশটির সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মকর্তাদের মধ্যে মতবিরোধের কারণে দেশটির যুদ্ধবাজ মহল এবং মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক মিত্ররা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। সূত্র: পার্সটুডে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস