বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: ১০০ কোটি টাকা পরিশোধের শর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্দ অবিলম্বে খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
১৯ নভেম্বরের মধ্যে এই ১০০ কোটি পরিশোধ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে আবারো সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্দ বন্ধ করে দিতে পারবে বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ।
আজ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল এই আদেশ দেন।
আদালত একইসঙ্গে সিটিসেলের কাছে বিটিআরসির পাওনা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দেন। এই কমিটিতে বিটিআরসির স্পেকট্রাম বা তরঙ্গ বরাদ্দবিষয়ক পরিচালক ও যুগ্ম সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তাকে সদস্য রাখতে বলা হয়েছে। এই কমিটিকে এক মাসের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।
আদালতে সিটিসেলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। বিটিআরসির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস।
এর আগে গত ২৫ অক্টোবর সিটিসেল বন্ধে সরকারের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
গত ১ নভেম্বর ও আজ শুনানি শেষে আদালত তরঙ্গ বরাদ্দ খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হয়নি, এই অভিযোগে গত ২১ অক্টোবর সিটিসেলের কার্যক্রম (স্পেকট্রাম বা তরঙ্গ) স্থগিত করে দেয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। বিটিআরসির এ সিদ্ধান্ত স্থগিত চেয়ে ২৫ নভেম্বর আপিল বিভাগে আবেদন করে সিটিসেল।
বিটিআরসি দাবি করেছে, সিটিসেলের কাছে সরকারের পাওনা রয়েছে ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। যদিও এই পাওনা নিয়ে পরস্পরবিরোধী দাবি রয়েছে।
বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে আপিল বিভাগ ছয় সপ্তাহের মধ্যে পাওনা টাকার তিন ভাগের দুই ভাগ এবং অবশিষ্ট টাকা দুই মাসের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য সিটিসেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
সিটিসেল তাদের হিসাব মতে বকেয়া টাকার মধ্যে ১৩০ কোটি বিটিআরসিকে এবং ১৪ কোটি টাকা এনবিআরের খাতে জমা করে। কিন্তু বিটিআরসি দাবি করে প্রথম কিস্তির টাকার অঙ্ক ৩১৮ কোটি টাকা। টাকার অঙ্ক নিয়ে দুই পক্ষের এই মতবিরোধের মধ্যে বিটিআরসি সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্দ স্থগিত করে দেন। এ পরিস্থিতিতে তরঙ্গ বরাদ্দ ফিরে পেতে সিটিসেল আপিল বিভাগে এই আবেদন করে।
এ প্রসঙ্গে সিটিসেলের আইনজীবী মাহবুব শফিক বলেন, আদালত যে সিদ্ধান্ত দেন তাতে দুই পক্ষের সম্মতিক্রমে টাকার অঙ্ক নির্দিষ্ট করার নির্দেশনা ছিল। সিটিসেলকে বিটিআরসির ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা বরাদ্দ দেয় ৮ দশমিক ৮২ মেগাহার্টজ। এই হিসাবে বিটিআরসির কিস্তি পাওনা হবে ১৪৪ কোটি টাকা। সে টাকা সিটিসেল জমা দিলেও বিটিআরসি তরঙ্গ বরাদ্দ স্থগিত করে দেয়।
বাংলা৭১নিউজ/এম