বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা:রাজধানীর তিনশো ফিটে শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) স্বপরিবারে ঘুরতে যান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী সালাউদ্দিন আহমেদ। মহাখালী থেকে সিএনজিতে উঠেন তারা। সঙ্গে ছিলো একটি ল্যাপটপ ব্যাগ।
তিনশো ফিটে নামার পর ভাড়া পরিশোধ করে নেমে যান তারা। এ সময় ল্যাপটপের ব্যাগটি ভুলে সিএনজিতে থেকে যায়।
ল্যাপটপ হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন সালাউদ্দিন। কারণ ল্যাপটপে অফিসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ছিলো। এ বিষয়ে খিলক্ষেত থানায় জিডি করতে গেলে হারানোর স্থানটি পড়েছে রূপগঞ্জ থানার অধীনে। এক পর্যায়ে ল্যাপটপটি পাওয়ার আশা ছেড়ে দেন সালাউদ্দিন।
সন্ধ্যায় হঠাৎ একটি মেয়ের কল আসে সালাউদ্দিনের ফোনে। মেয়েটি জানায়, তার ল্যাপটপটি তাদের কাছে রয়েছে। এসে নিয়ে যেতে অনুরোধ করেন। মেয়েটি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তার সিএনজি চালক বাবা ব্যাগে থাকা ইংরেজি কাগজ পড়তে না পারায় তাকে জানাতে দেরি হয়েছে। সন্ধ্যায় গিয়ে ল্যাপটপটি নিয়ে আসে সালাউদ্দিন।
সিএনজি চালক আব্দুল মতিন জানান, ১৯৮৮ সাল থেকে সিএনজি চালান ঢাকায়। চার মেয়ে নিয়ে থাকেন আদাবরে। বড় তিন মেয়ে বিবাহিত।
সিএনজি চালক মতিন জানান, সিএনজিতে ল্যাপটপ আছে বিষয়টি তিনি জানতেন না। তিনশো ফিটে যাত্রী নামানোর পর সিএনজিতো আরো দুজন যাত্রী তোলেন। তারা সিএনজি উঠে জানতে চান ব্যাগটি কার? তখন তিনি কৌশলে বলেন, ব্যাগটি তার। তখন তিনি বুঝতে পারেন তিনশো ফিটে নামানো যাত্রীর ব্যাগ এটি। তখন তিনি ব্যাগ খুঁজে কিছু কাগজ পান। তবে কাগজে ইংরেজি লেখা থাকায় তিনি পড়তে পারেননি। তাই বাসায় এসে মেয়েকে দিয়ে ল্যাপটপের মালিককে ফোন দেয়া হয়।
সিএনজি চালক মতিন আরো জানান, একবার পারিবারিক কারণে কিছু টাকা ধার করেন একজনের কাছ থেকে। অভাব অনটনের কারনে টাকাটি পরিশোধ করতে পারছিলেন না। আত্মীয়স্বজন অনেকে বলেছিলো পালিয়ে যেতে। তিনি পালিয়ে যাননি। সিএনজি চালিয়ে দেনা শোধ করেছেন।
মতিনের সততায় মুগ্ধ হন সালাউদ্দিন আহমেদ। এক বুক আশা নিয়ে ফিরে আসেন বাসায়। বর্তমান সময়ে চারিদিকে যখন অসৎ মানুষের আনাগোনা, সিএনজি চালক মতিনের মত এমন মানুষ সত্যিই আছে দেশে। ভালো থাকুক, সুখে থাকুক মতিনের পরিবার।
বাংলা৭১নিউজ/এবি