বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বিএনপি অভিযোগ করেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকারের ১২৭টি নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি, ব্যালট ছিনতাই, হামলা, মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। তবে এত কিছুর পরও নির্বাচন কমিশন নীরব দর্শক হয়ে থেকেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কমিশন কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি।
আজ নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব অভিযোগ করেন। তিনি বলেছেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো বর্তমান সিইসি নুরুল হুদার অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তিনি যতই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলুন না কেন, সেটি জনগণের সঙ্গে ধাপ্পাবাজি ছাড়া কিছুই নয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সিইসি আওয়ামী সরকারের ছায়াঘেরা পথেই হেঁটে নির্বাচন পরিচালনায় নিজ প্রভুদের খুশি করবেন। এর বাইরে তিনি যেতে পারবেন না। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অধীনে যেকোনো নির্বাচনই ইতিহাসে কলঙ্কমাখা নির্বাচনের স্মারক হয়ে থাকবে। কে এম নুরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে বসানো হয়েছে শুধু জনগণকে কোণঠাসা করে ভোটকেন্দ্র সরকারি সন্ত্রাসীদের কাছে ইজারা দিতে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ও জেলা পরিষদের ১২৭টি এলাকায় বিভিন্ন পদে সাধারণ, স্থগিত নির্বাচন ও উপনির্বাচনে আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডারদের পুরোনো তাণ্ডব আবারও ফুটে উঠেছে। বিভিন্ন এলাকার ভোট জালিয়াতির কিছুটা খণ্ডচিত্র গণমাধ্যমে এসেছে। রকিব মার্কা নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হলো, সেই ভয়াবহ দৃশ্যই গতকালের নির্বাচনে দেখা গেল। সাংবাদিকেরা তাণ্ডবের ছবি তুলতে গেলে ক্যামেরা ভাঙচুরসহ সাংবাদিকদের বেধড়ক মারধর করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করে আগের রাতেই বাক্স ভরে রাখা, সকাল ১০টার আগেই ভোট শেষ হয়ে যাওয়া, ব্যালট পেপার ছিনতাই, বিএনপি প্রার্থীর এজেন্ট ও ভোটারদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে জাল ভোটের মহোৎসব, প্রকাশ্যে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের জাল ভোট প্রদান, হামলা, ভাঙচুরসহ নানা তাণ্ডব চলে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে।
রিজভীর অভিযোগ, ভোটকেন্দ্র থেকে ভোটারদের মারধর করে বের করে দিয়ে স্কুলছাত্রদেরও লাইন ধরে ভোট দিতে দেখা গেছে। কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গাসহ ১২৭টি এলাকায় পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ও জেলা পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েক দিন ধরেই নির্বাচন এলাকাগুলোতে সশস্ত্র তাণ্ডব চালিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তারা বিএনপির প্রার্থী ও সমর্থকদের প্রচার-প্রচারণা পর্যন্ত করতে দেয়নি। বিভিন্ন স্থানে বিএনপির প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে শাসকগোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা। বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার প্রতিবাদ করলেও এমনকি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব সুস্পষ্টভাবে গণমাধ্যমে প্রচার হলেও বর্তমান সিইসিসহ নির্বাচনী কর্মকর্তারা কোনো কর্ণপাত করেননি।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস