মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন ও জুড়ীর বটুলি শুল্ক স্টেশন দিয়ে টানা সাতদিন ধরে বন্ধ রয়েছে আমদানি-রপ্তানি।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই কোনো পণ্যবাহী যান চালাচল করেনি এই দুই শুল্ক স্টেশনে। ভারতে ইসকন সদস্যদের বাধার মুখে বন্ধ হয়ে গেছে এই দুই শুল্ক স্টেশনের সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। এতে মালামাল নিয়ে লোকসানের শঙ্কায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।
শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরতরা বলছেন, বাংলাদেশ অংশে রপ্তানিতে কোনো সমস্যা নেই৷ ভারত থেকে মালামাল গ্রহণ না করায় আপাতত বন্ধ রয়েছে পণ্য রপ্তানি।
জানা যায়, বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে ভারতের কৈলাশহরে ইসকন সদস্যরা শুল্ক স্টেশনের রাস্তা বন্ধ করে আমদানি-রপ্তানিতে বাধা প্রদান করেন। এরপর বন্ধ হয়ে যায় দুই দেশের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে রপ্তানিপণ্য বিশেষ করে মাছ, কাঁচামালসহ পচনশীল বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রপ্তানির সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান।
চাতলাপুর এলসি স্টেশনের ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি সোহেল রানা চৌধুরী জানান, হঠাৎ করেই ভারতের দিকে ইসকন সদস্যরা চাতলাপুর শুল্ক স্টেশনের রাস্তা বন্ধ করে দেন এবং তারা বিক্ষোভ করে তাদের পাতাকা বেঁধে দেন। এতে করে বাংলাদেশ থেকে মালবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। একইসঙ্গে ভারত থেকেও কোনো মালামাল আসছে না।
সাতদিন ধরে আমাদের প্রায় কোটি টাকার মালামাল আটকে আছে। ভারতে অনেক মাছসহ কাঁচা পণ্য পাঠানো হতো, কিন্তু হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ইসকনের সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে হঠাৎ করেই ভরতের ইসকন সদস্যরা চাতলাপুর শুল্ক স্টেশনের রাস্তা বন্ধ করে সংগঠনের পতাকা হাতে বিক্ষোভ করেন। এতে বিগত সাত দিন ধরে বাংলাদেশ থেকে মালবাহী গাড়ি চলাচল করেছে না, একইভাবে ভারত থেকেও কোনো মালামাল আসছে না।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন এই দুটি স্টেশন দিয়ে কোটি টাকার উপরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে। বিশেষ করে মাছসহ অনেক কাঁচাপণ্য পাঠানো হয়। তবে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও যাত্রী আসা-যাওয়া স্বাভাবিক রয়েছে জানান শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষ।
চাতলাপুর চেকপোস্টের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, চাতলাপুর কিংবা স্থল শুল্ক স্টেশন প্রশাসনিক কোনো সিদ্ধান্তে বন্ধ হয়নি। ভারত অংশে কিছু লোকের বাধার কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে। শুল্ক স্টেশন চালু ও আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত কথা হচ্ছে।
বটুলী শুল্ক স্টেশনের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাওন দে জানান, গত শুক্রবার থেকে ভারতে ইসকন সদস্যদের বাঁধায় বটুলী শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও এই ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে ভারতীয়দের বাংলাদেশে আসা-যাওয়া কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আমরা ভারতের শুল্ক বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু এখনো তারা কিছু জানায়নি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ