বাংলা৭১নিউজ, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের পাইকাড়া গ্রামে যৌতুকের দাবীতে গৃহবধূর গায়ে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়ার ১৭দিন পর অবশেষে মারা গেছেন। নিহত গৃহবধূর নাম লিমা পারভীন (১৯)। তিনি ওই গ্রামের আকরাম সানার স্ত্রী।
শনিবার রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে মারা যাওয়ার বিষয়টি তার চাচা নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় কালিগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে গৃহবধূর স্বামীসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান ওসি সুবির দত্ত।
পুলিশ জানায়, উপজেলার বরেয়া গ্রামের গফফার গাজীর মেয়ে লিমা পারভীনের সাথে প্রায় ২ বছর আগে পারিবারিক ভাবে পাশ^বর্তী পাইকাড়া গ্রামের আকবর সানার ছেলে আকরাম সানার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ব্যবসার জন্য আকরাম ও তার পিতা আকবর সানা যৌতুক হিসেবে ৭৫ হাজার টাকা গহণ করেন। পরবর্তীতে মোটরসাইকেলের দাবিতে স্বামী, শ^শুর ও শাশুড়ি বিভিন্ন সময়ে আবারো শারীরিকভাবে তাকে নির্যাতন শুরু করে।
এক পর্যায়ে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেন লিমা পারভীন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় লীমাকে পূণরায় শ^শুরবাড়িতে ফিরিয়ে নেয়া হয়। কিছুদিন না যেতেই আবারও শুরু হয় স্বামী, শ^শুর ও শাশুড়ির নির্মম নির্যাতন।
এরই জেরধরে গত ১৭ জানুয়ারী দুপুরে শাশুড়ি জাহানারা পুত্রবধূ লিমা পারভীনকে ঝাড়– দিয়ে বেদম মারপিট করে। এরপর গৃহবধূর স্বামী আকরাম ও শ^শুর আকবর সানা তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে ম্যাচ ঠুকে আগুন জ¦ালিয়ে দেয়। দাউ দাউ করে জ¦লতে থাকে লিমার শরীরে আগুন।
গৃহবধূর চিৎকারে এলাকাবাসি এগিয়ে এলে ঘরের দরজার শিকল লাগিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান আকরাম, তার পিতা আকবর ও মাতা জাহানারা। পানি দিয়ে আত্মরক্ষার আগেই শরীরে অধিকাংশ স্থান ঝলসে যায় লীমা পারভীনের।
এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে প্রথমে নেয়া হয় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে। সেখান থেকে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওইদিনই নেয়া হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসার ১৭ দিন পর শনিবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন লিমা পারভীন।
লীমা পারভীনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার চাচা আব্দুল জব্বার গাজী। এঘটনায় লীমার পিতা আব্দুল গফফার গাজী জামাতা আকরাম, বেয়াই আকবর সানা ও বেয়াইন জাহানারা খাতুনের বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে আসামীরা পলাতক রয়েছে।
কালিগঞ্জ থানার ওসি সুবির দত্ত জানান, আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস