বাংলা৭১নিউজ, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ৩ টি ইউনিয়নের ধলেশ্বরী ও কালিগংঙ্গা কেড়ে নিয়েছে শতাধিক বাড়ী। বিলীন হয়েগেছে সড়ক, ফষলি জমি বাষঝাড়। হুমকির মধ্যে আছে ৪ টি উচ্চ বিদ্যালয়, ৩ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১ টি মাদ্রাসা, ২ টি বাজার, বড় ব্রীজসহ কবর স্থান। বাড়ী হারা শতাধিক পরিবারের কয়েক শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে অন্যনের বাড়ী ও খোলা আকাশের নিচে। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে না খেয়ে দিন পাড় করলেও এখন পর্যন্ত তালিকা ছাড়া কোন কোন কিছু মিলেনী ঐ পরিবারগুলির।
উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গন এলাকায় শুক্রবার গিয়ে দেখা গেছে, বর্ষার মৌষুমের শুরুতেই ধলেশ্বরী নদীতে ব্যপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। অসহায় মানুষ গুলি বাড়ী ঘর ভেংগে যাওয়ায় অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে। এ ইউনিয়নের ছনকা, বরাইদ, গোপালপুর ও পাতিলাপাড়া গ্রামে বেশী নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। প্রতিনিয়তই এখানে নতুন নতুন স্থাপনা ও ফষলি জামি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে।
বরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ হারুন – অর- রশিদ বলেন, বিগত এক সপ্তাহে তার ৪ টি গ্রামের ৬০ টি বাড়ী ধলেশ্বরী নদী কেড়ে নিয়েছে। যেভাবে প্রতিদিন নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে, তাতে যে কোন সময় ছনকা বাজার ও গরু ছাগলের হাট, ছনকা বাজার মসজিদ, ছনকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাতিলাপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়, বরাইদ গ্রামের ফয়জুননেছা উচ্চ বিদ্যালয় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভনা রয়েছে।
ছনকা গ্রামের শাজাহান জানান, বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা গ্রাম থেকে কায়াখুলা গ্রামের প্রায় ৩ কিলোমিটার কাচা সড়ক নদী ভাঙ্গন হওয়ায় ঐ এলাকার সাথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
এ ব্যাপারে নদী ভাঙ্গনের শিকার রাহেলা বেগম জানান, তার শেষ সম্ভল ভিটে মাটি ধলেশ্বরী এবার কেড়ে নেওয়াতে তার থাকার কোন জায়গা না পাওয়াতে পাশের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন এখন পর্যন্ত সরকারী কোন সহযোগীতা পান নি।
হাবিয়া জানান, ৫ সন্তান নিয়ে এখন আধা বেলা খেয়ে দিন পাড় করছি।
অপরদিকে তিল্লি ইউনিয়নের আয়নাপুর গ্রামে ২০ টি ও তিল্লি গ্রামের ১০টি বাড়ী ধলেশ্বরী ও কালিগংঙ্গায় বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় ৬ শত শতাংশ ফষলি জমি ও দক্ষিন আয়না পুর এর সাথে পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলার সাথে সংযোগ সড়কের এক কিলোমিটার সড়কও নদী কেড়ে নিয়েছে। এতে সাটুরিয়ার তিল্লি ইউনিয়নের সাথে ধৌলতুপর উপজেলার যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
এ ব্যাপারে তিল্লি ইউনিয়রে চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সালাম জানান, তার ইউনিয়নের জেলার দুই নদী ধলেশ্বরী ও কালিগংঙ্গা প্রবাহিত হয়েছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন স্থানে ভাঙ্গন হচ্ছে। ভাঙ্গনের হুমকির মধ্যে রয়েছে তিল্লি উচ্চ বিদ্যালয়. তিল্লি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, তিল্লি বাজার ও তিল্লির বড় ব্রীজ। আর ১০০ মিটার ভাঙ্গন অতিক্রম করলেই জেলা শহরের সাথে তিল্লির পাকা সড়কও ভাঙ্গনের কবলে পড়বে।
তবে সরকারি কোন সাহায্য সহযোগীতা এখনও পৌছায় নি বলেও স্বীকার করেন ঐ ইউপি চেয়ারম্যান।
এ উপজেলার আরেক নদী ভাঙ্গন এলাকা হচ্ছে দিঘুলিয়া ইউনিয়ন। এখানকার জালশুকা ও নাসরপুর এলাকায় ১০টির মত বাড়ী নদী ভাঙ্গনের স্বাীকার হয়েছে। এ ইউনিয়নে জালশুকা সরকারী প্রাইমারী স্কুল ছাড়া তেমন কোন স্থাপনা ভাঙ্গনের হুমকির মধ্যে নেই বলে জানিয়েছেন দিঘুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মতিয়ার রহমান (মতি)।
এ ব্যাপারে ছনকা গ্রাগমের মোন্তাজ আলী জানান, বাড়ী ছাড়া হইছি ঠাই নিছে ক্ষেতের মধ্যে ভাঙ্গা টিনের ঘর টি কাওরা দিয়ে আছি। কিন্তু বৃষ্টি নামলেই পরিবার নিয়ে ভিজতে হয়। আমরা নদী ভাঙ্গন থেকে স্থায়ী মুক্তি চাই।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ বসির উদ্দিন ঠান্ডু জানান, নদী ভাঙ্গনের খবর আমি পেয়ে চেয়ারম্যানদের তালিকা করতে বলেছি। তা হাতে পেলেই সাহায্য, সহহেযাগীতা গ্রহনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানাব।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল হামিদ মিয়া জানান, আমরা ঐ সব নদীভাঙ্গন কবলিত এলাকা সরজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করব।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস