সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফগামী পর্যটকবাহী ‘এসটি শহীদ সালাম’ নামে জাহাজটির ইঞ্জিনের মোটর বিকল হয়ে ২০৫ পর্যটক নিয়ে বঙ্গোপসাগরে আটকা পড়ে। তাদের সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের লে. কমান্ডার মো. আমিরুল হক জানান, সেন্টমার্টিনের ৫০০ গজ অভ্যন্তরে রয়েছে জাহাজটি। সেন্টমার্টিনের কোস্টগার্ড সদস্যরা সেটি দেখভাল করেন।
সকালে এস টি শহীদ সালাম জাহাজের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, মূলত জাহাজটির ইঞ্জিন বিকল হয়নি; নোনা পানির কারণে জাহাজের মোটরের সমস্যা হয়েছিল। জাহাজে সমস্যা হওয়ার পরপরই চট্টগ্রাম থেকে ইঞ্জিনিয়ার ডাকা হয়। তারা সকালে জাহাজে পৌঁছে মোটরটি মেরামত করেছেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাহাজটি পুনরায় চলাচল করছে। বিষয়টি কোস্টগার্ডকে অবহিত করা হয়েছে।
মোহাম্মদ রাশেদ আরও বলেন, জাহাজটি চালিয়ে সেন্টমার্টিনের জেটি ঘাটে নেওয়া হয়েছে। বিকেল ৩টার দিকে জাহাজটির যেসব যাত্রী সেন্টমার্টিনে অবস্থান করছেন তাদের নিয়ে পুনরায় টেকনাফের উদ্দেশে রওনা হবে।
সেন্টমার্টিনস্থ কোস্টগার্ডের স্টেশন ইনচার্জ লে. কমান্ডার রিদুয়ান হায়দার বলেন, জাহাজটি সচল হয়েছে। সেন্টমার্টিন থেকে ৫’শ গজ দূরে যেখানে বিকল হয়েছিল যেখান থেকে জাহাজটি সচল হওয়ার পর চালিয়ে সেন্টমার্টিন ঘাটে পৌঁছাছে। পরে বিকেল ৩টার দিকে যাত্রী নিয়ে টেকনাফের উদ্দেশে রওনা হবে।
রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাহাজটি ২২৯ পর্যটক নিয়ে টেকনাফের দমদমিয়া বিআইডব্লিউটিএ বন্দর থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে যাত্রা করে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সেন্টমার্টিন জেটিঘাট থেকে ২০৫ পর্যটক নিয়ে ফেরার পথে ইঞ্জিনের মোটর বিকল হয়ে পড়ে। জাহাজটি সন্ধ্যা ৬টায় টেকনাফের দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছানোর কথা ছিল।
জাহাজটি ওই স্থানে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে আটকে থাকে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে স্পিডবোট ও ট্রলারে করে পর্যটকদের সেন্টমার্টিনে ফেরত আনা হয়। জাহাজটি ঘাটে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
সেন্টমার্টিন ইউপির চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ওই জাহাজটি বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে দুই শতাধিক পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন জেটি থেকে টেকনাফের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার ১৫ মিনিট পরেই ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে স্পিডবোট ও ট্রলারে করে পর্যটকদের উদ্ধার করে সেন্টমার্টিন নিয়ে যান।
ওই জাহাজে থাকা রাজশাহীর একজন পযটক বলেন, সেন্টমার্টিন জেটি থেকে ছেড়ে আসার কিছুক্ষণ পরে জাহাজটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে জাহাজের নাবিকরা ইঞ্জিন মেরামতে ব্যর্থ হয়। এ সময় জাহাজের অনেক নারী ও শিশু পর্যটকরা ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন। জাহাজটিতে দুই শতাধিক পর্যটক ছিল।
এ বিষয়ে জানতে ‘এস টি শহীদ সালাম জাহাজের’ টেকনাফের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, রোববার সকালে চলতি মৌসুমের শুরুতেই ২২৯ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন উদ্দেশে রওনা হয়। কিছু যাত্রী রাত্রিযাপনের জন্য সেন্টমার্টিনের অবস্থান করেন। বাকি প্রায় দুই শতাধিক পর্যটক নিয়ে বিকেলে ফেরার পথে জাহাজের ইঞ্জিন (গিয়ার) বিকল হয়ে পড়ে। বিকল হয়ে পড়ায় ইঞ্জিন চালুর চেষ্টা করা হয়।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, জাহাজটির ইঞ্জিনের মোটর বিকল হয়ে পড়ার খবর জানার পর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। জাহাজে থাকা পর্যটকদের নিরাপদে সেন্টমার্টিনে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এমএন