বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: ‘সাংবাদিকদের ওয়েজবোর্ড প্রয়োজন নেই’ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের এমন বক্তব্য প্রত্যাখান করেছেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র (ডিআরইউ) সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা। তিনি সাংবাদিকের রুটি-রুজির দাবি নবম ওয়েজ বোর্ডের বিষয়টি অর্থমন্ত্রীকে পুনবিবেচনা আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই দাবির প্রতি মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন রয়েছে। আজ মঙ্গলবার তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি একথা বলেন।
সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বাংলা৭১নিউজ-কে বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম যে হারে বেড়েছে-এ অবস্থায় সাংবাদিকরা জীবন চালাতে পারছে না। সাংবাদিকদের রুটি-রুজি, তাদের টিকে থাকার স্বার্থেই নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষনা করতে হবে। তিনি বলেন, নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) এর প্রতিনিধিরা যেভাবে অর্থমন্ত্রীকে বুঝিয়েছেন-তিনি সেভাবেই কথা বলেছেন। বাস্তবতা হচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের চেয়ে অনেক বেশি বেতন পান।
সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, অর্থমন্ত্রী যেভাবে দশ/বারোটি ছাড়া সকল পত্রিকাকে ‘অল আর রাবিশ, বোগাস’ বলে মন্তব্য করেছেন এভাবে তার বলাটা সমুচিন হয়নি। আমি মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে আহ্বান জানাবো, ওয়েজবোর্ড এবং পত্রিকাগুলোকে রাবিশ উল্লেখ করে আপনি যে বক্তব্য রেখেছেন তা প্রত্যাহার করে নিন।
তিনি বলেন, কোন পত্রিকা যদি অষ্টমওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করে না থাকে, কিম্বা কোন পত্রিকা যদি ভুয়া প্রচার সংখ্যা দেখিয়ে সরকারের বাড়তি সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকে-এজন্য তথ্য মন্ত্রনালয় এবং এই মন্ত্রনালয়ের অধিন ডিএফপি এজন্য দায়ী। এ ব্যপারে সরকার তার তদারকি আরও জোরদার করতে পারে এবং যেসব পত্রিকা অস্টম ওয়োজবোর্ড বাস্তবায়ন করবে না তাদের ‘রেটকার্ড’ বাতিল করে দেয়ার এখতিয়ার তথ্য মন্ত্রনালয়ের রয়েছে। কিন্ত তা না করে নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষনার টালবাহানা কোনভাবেই সাংবাদিক সমাজ মেনে নেবে না। আমরা অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাবো-নোয়াবের প্রতিনিধিদের একতরফা বক্তব্যে আপনি বিভ্রান্ত হবেন না।
সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, সাংবাদিকের অষ্টমওয়েজ দেয়ার ব্যপারে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। এরপরও তথ্য মন্ত্রনালয় কেন ওয়েজবোর্ড ঘোষনা করছে না-এটা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।
সাখাওয়াত হোসেন বাদশা আরও বলেন, ইলেকট্রনিক মিডিয়া নিয়ে অর্থমন্ত্রী যে বক্তব্য রেখেছেন তা সঠিক নয়। বাস্তবতা হচ্ছে- ‘বেসরকারি টেলিভিশন ওয়েজবোর্ডের আওতায় নয়, এখানে কোনও বেতন কাঠামো নেই।’ বরং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিএফইউজে, ডিইউজে দাবি জানিয়ে আসছে-নবম ওয়েজবোর্ডে ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে অন্তর্ভক্ত করতে হবে। এই দাবিতে যেখানে আমরা অনঢ়, সেখানে অর্থমন্ত্রীকে একটি মহল ভুল বোঝাচ্ছেন।
জনাব বাদশা ওয়েজবোর্ড নিয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাথে অর্থমন্ত্রীর বসার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী ১৭ আগষ্ট এই বৈঠক হবে বলে আমরা জানতে পেরেছি। ওই বৈঠকে নবম ওয়েজবোর্ডের পক্ষে আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরবো। আমাদের বিশ্বাস, ওই বৈঠকের পরই অর্থমন্ত্রী তার পুর্বের অবস্থান পরিবর্তন করে নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষার পক্ষেই নির্দেশনা দেবেন।
উল্লেখ্য, আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রীর সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, নোয়াবের সভাপতি প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সমকাল প্রকাশক এ কে আজাদ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মর্তুজা আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, ডিএফপির মহাপরিচালক ইসতাক আহমেদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে এসব বিভ্রান্তিমূলক তথ্য তুলে ধরেন।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস