সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
গণঅভ্যুত্থানে আহত-নিহতদের তালিকা প্রকাশসহ ৯ দাবি শেখ পরিবারের ছয় সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা ‘দেশের ৬ কোটি শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও মজুরির মানদণ্ড নেই’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলবে যে ব্যাখ্যা দিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার মণিপুরে আসাম রাইফেলসের ক্যাম্পে হামলা উত্তেজিত জনতার রেমিট্যান্স আহরণে ‘গোল্ড অ্যাওয়ার্ড’ পেলো ইসলামী ব্যাংক মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ নতুন করে ভ্যাট আরোপ হবে সরকারের নির্দয় সিদ্ধান্ত : জিএম কাদের মোবাইল-ইন্টারনেট সেবায় ভ্যাট প্রত্যাহার না করলে এনবিআর ঘেরাও রমজান ও ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করল আরব আমিরাত এবার মহাশূন্যে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্প বানাবে চীন! ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব সাধারণ নির্বাচনকে ‘সর্বশ্রেষ্ঠ ও ঐতিহাসিক’ করতে চায় সরকার টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জাকিরের ঝড়, সিলেটের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি কাউন্সিল নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা নিহত বগুড়া বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে হেনরীর জমি, ফ্ল্যাটসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেশে এইচএমপি ভাইরাস শনাক্ত ২৬ ফুট লম্বা স্যান্ডেল, গিনেসে নাম উঠছে সানিয়ার দীর্ঘমেয়াদী ও বড় ধরনের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ইরান

সরকারি হিসাবের তুলনায় করোনায় মৃত্যু অনেক বেশি

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট, ২০২১
  • ৪৪ বার পড়া হয়েছে
ফাইল ছবি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা রোগনির্ণয় কেন্দ্র আছে প্রায় ১৪ হাজার। এগুলোর মধ্যে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। করোনা চিকিৎসার অনুমোদন পাওয়া বেসরকারি সব হাসপাতাল করোনার রোগী ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য নিয়মিতভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পাঠায়। অনুমোদনহীন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো তা করে না। তাই মৃত্যুর সঠিক তথ্যও জানা যাচ্ছে না।

অনুমোদনহীন হাসপাতালগুলোতে করোনার চিকিৎসাবিধি না মানারও প্রবণতা থাকে। এতে যেমন সঠিক চিকিৎসা হয় না, তেমনি এখানে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ারও ঝুঁকি রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক বে–নজির আহমেদ বলেন, ‘উত্তরার তিনটি হাসপাতালে মৃত্যুর যে তথ্য পাওয়া গেছে, তা বিচ্ছিন্ন কোনো তথ্য নয়, এটি সারা দেশের একটি চিত্র। সারা দেশের বেসরকারি হাসপাতালের তথ্য ঠিকভাবে সংগ্রহ করা সম্ভব হলে দেখা যাবে, স্বাস্থ্য বিভাগ যে শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর তথ্য বলছে, প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে ঢের বেশি।’

সরেজমিন তিন হাসপাতাল

গতকাল সোমবার উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরে শাহ মাখদুম অ্যাভিনিউর শেষ প্রান্তে একটি বহুতল ভবনে রেডিকেল হাসপাতাল। দ্বিতীয় তলায় একটি বেসরকারি ব্যাংকের কার্যালয়। তৃতীয় তলায় তথ্য ও অনুসন্ধানের জায়গা। সেখানে কথা হয় হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন ও সহব্যবস্থাপক শাহীন উদ্দীনের সঙ্গে। তাঁরা বললেন, এটি ২০ শয্যার হাসপাতাল। করোনা চিকিৎসার অনুমোদন তাঁদের নেই।

অনুমোদন না থাকলেও কীভাবে করোনা রোগীর চিকিৎসা করছেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে আমজাদ হোসেন পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘যারা চিকিৎসার জন্য আসছে, তাদের কি আমরা ভর্তি করব না?’

হাসপাতালের এই দুই কর্মকর্তা জানালেন, গত এক মাসে এই হাসপাতালে করোনায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে সেই তথ্য তাঁরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানাননি। কেন জানাননি প্রশ্নের উত্তরে আমজাদ হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানোর ব্যবস্থা নেই।

এই হাসপাতালের কাছেই সোনারগাঁও জনপথ রোডে উত্তরা আল–আশরাফ জেনারেল হাসপাতাল। দুপুর ১২টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, অনুসন্ধানের ডেস্ক ফাঁকা। পরিবেশটা সুনসান। দুটি কিশোর মুঠোফোন নিয়ে ব্যস্ত। এদের একজন অনুসন্ধান ডেস্কের দায়িত্ব থাকা ব্যক্তিকে ডেনে আনে। ওই ব্যক্তি বলেন, হাসপাতালের মালিক বা তথ্য দেওয়ার মতো কোনো ব্যক্তি হাসপাতালে উপস্থিত নেই। তিনি মুঠোফোনে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়ে পরিচালক মো. জাহিদুর রহমানের ভিজিটিং কার্ড হাতে ধরিয়ে দেন। মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও পরিচালকের সাড়া পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গত দুই মাসে এই হাসপাতালে চারজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে শিন শিন জাপান হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ঢোকার মুখে ১৫–২০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার। অন্য দুটি হাসপাতালের চেয়ে এখানে লোকসমাগম বেশি। হাসপাতালের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, তাঁরা করোনা রোগীর চিকিৎসা করেন না। তবে শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসা রোগী ফেরান না। শ্বাসকষ্ট বা অন্য সমস্যা নিয়ে আসা রোগীর করোনা শনাক্ত হলে তাঁদের অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসা কত রোগীর মৃত্যু হয়েছে, সেই তথ্য দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গত দুই মাসে এই হাসপাতাল ১০ জন করোনা রোগী মারা গেছেন।

এই তিন হাসপাতাল পরিদর্শনে যাওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঁচ সদস্যের একটি দলের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা দুই মাসের তথ্য নিয়েছি। মৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চয়ই আরও বেশি হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. ফরিদ হোসেন মিঞা বলেন, ‘এই পরিদর্শনের ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন তৈরি হচ্ছে। সেই প্রতিবেদনে নিশ্চয় কিছু সুপারিশ করা হবে।’

সারা দেশের পরিস্থিতি অজানা

সারা দেশের প্রায় ছয় হাজার বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কোন কোন হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা হয়, তার সঠিক তথ্য নেই।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সহসভাপতি শেখ বাহারুল আলম বলেন, ‘খুলনায় তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার অনুমোদন আছে। কিন্তু এর বাইরে আরও অনেক ছোট ছোট ক্লিনিকে করোনার চিকিৎসা হচ্ছে। রোগীর ‘করোনার উপসর্গ’ আছে, এই কথা বলে করোনা রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছে। এটা অপরাধ।’ একই ধরনের কথা প্রথম আলোর চট্টগ্রাম ও সাতক্ষীরার প্রতিনিধিকে বলেছেন চিকিৎসক নেতা ও চিকিৎসকেরা।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মইনুল আহসান বলেন, ‘তাঁদের সংগঠনে প্রায় ১২ হাজার সদস্য। সদস্যরা কে কী করছে, এটা জানা কঠিন। সবাইকে নিয়মনীতি অনুসরণ করার কথা বলা হয়। আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না, পারে সরকার।’

সারা দেশের সব বেসরকারি হাসপাতালে নিয়মিত নজরদারি করার ঘাটতি আছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। সম্প্রতি হাসপাতাল পরিদর্শনের জন্য নতুন উদ্যোগ নিয়েছে অধিদপ্তর। প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুবার তাদের পরিদর্শনে যাওয়ার কথা। উত্তরার ওই তিন হাসপাতালের বিষয়ে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘এ রকম ঘটনা আরও থাকতে পারে। আমরা যখনই জানব, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: প্রথম আলো

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com