বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় অবৈধভাবে মৎস্য আহরণ যে কোনো মূল্যে বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
মন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সব প্রকার নৌযান কর্তৃক সব প্রকার মৎস্য ও ক্রাস্টাশিয়ান্স (চিংড়ি, লবস্টার, কাটল ফিস প্রভৃতি) আহরণ নিষিদ্ধ। এ সময় বিদেশি বা দেশি মৎস্য আহরণকারীদের অবৈধ মৎস্য আহরণ যে কোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে। দেশের অর্থনীতির জন্য, মানুষের পুষ্টি বৃদ্ধির জন্য এটা করতে হবে।
রোববার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমুদ্রে ৬৫দিন মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকাল কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে আয়োজিত অনলাইন সভায় সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, যুগ্ম সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ সভায় উপস্থিত ছিলেন এবং বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর প্রতিনিধি, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ পুলিশ ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের প্রতিনিধি, নৌ-পুলিশের ডিআইজি, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনার, সামুদ্রিক মৎস্য দফতর-চট্টগ্রামের পরিচালক, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এবং মেরিন হোয়াইট ফিশ ট্রলার ওনার অ্যাসোসিয়েশন, সামুদ্রিক মৎস্য আহরণকারী বোট মালিক সমিতি, বাংলাদেশ মেরিন ফিশারীজ অ্যাসোসিয়েশন, জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির প্রতিনিধিরা সভায় অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, পুষ্টির অভাব দূর করতে হলে মাছের চাষ বৃদ্ধি করা খুবই দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন, মাছের যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আমরা অর্জন করেছি, এর পরিসরকে আরও বাড়াতে হবে। যাতে বিদেশে মাছ রফতানি করে গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। ধানের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি মাছ, মাংস, দুধ, ডিমের ক্ষেত্রকে সমৃদ্ধ করতে না পারলে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সঙ্কট থেকে যেতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যেন কোনোভাবেই উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যবহত না হয়।
তিনি আরও বলেন, সমুদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধকালীন মৎস্য আহরণে বিরত থাকা জেলেদের আমরা মাসিক ৪০ কেজি হারে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি। করোনা পরিস্থিতিতে এটা বন্টন করা জটিল কাজ। এ কাজে সম্পৃক্ত জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। মৎস্যজীবীদের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির খাতটি অনেক উন্নতি ঘটেছে। খাদ্য সহায়তায় পরিবহন খরচ ছিল না। পরিবহন খরচ সরকারের পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে পৌঁছানো হবে।
অনলাইন সভায় সংযুক্তদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, মাছকে বেড়ে উঠতে দেয়া এবং মাছকে অবৈধভাবে আহরণ করতে না দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত আমরা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে চাই। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্টি ও পরিষ্কারভাবে বলব, আপনারা কঠোর অবস্থান নেবেন। কাউকে আইনের বাইরে কোনো কিছু করতে দেবেন না। সেক্ষেত্রে যে কোনো চাপ আমরা মোকাবেলা করব। সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কোনো গাফিলতি মানা হবে না উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, দায়িত্বপালনে কোনো শৈথিল্য দেখা গেলে রাষ্ট্রের নিয়ম অনুসরণের স্বার্থে সেটাকে কঠোরভাবে গ্রহণ করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
বাংলা৭১নিউজ/এমএস