বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: সংসদ সদস্যদের নিয়ে ‘মনগড়া’ সংবাদ পরিবেশনের অভিযোগে সংসদে বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্নের নোটিশ উত্থাপন করেছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এনামুল হক।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তা আমলে নিয়ে সংসদ সদস্যদের সম্মতিক্রমে বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে পাঠান। স্পিকার এ কমিটির সভাপতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ এ কমিটির সদস্য।
ইংরেজি দৈনিক ‘ডেইলি অবজার্ভার’-এ প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে তিনি এ নোটিশটি উত্থাপন করেন। এ সময় তিনি পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীকে সংসদে তলব করারও দাবি জানান।
‘দেশে ড্রাগ ডিলারদের গ্রেফতারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের অপেক্ষায় পুলিশ’ শীর্ষক শিরোনামে সংসদ সদস্যদের মান ক্ষুণ্ন করে ওই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে বলে এনামুল হক দাবি করেন।
এর আগে বুধবার সরকার দলের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে একই সংবাদ বিষয়ে ইকবাল সোবহান চৌধুরীর কঠোর সমালোচনা করেন।
এনামুল হক তার নোটিশ উত্থাপন কালে বলেন, ‘সংসদ সদস্যদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এই সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। মিথ্যা বানোয়াট খবর দিয়ে আমাদের বিতর্কিত করা হচ্ছে। এতে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানহানি হয়েছে। আমরা কোনও সংসদ সদস্যই প্রধানমন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন করতে চাই না। আমাদের কারণে যদি তার সম্মানহানি হয়, তাহলে আমরা সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে চলে যাব।’
‘মনগড়া’ সংবাদ পরিবেশনের জন্য অবজার্ভার পত্রিকার সম্পাদককে সংসদে তলবের দাবি করে এনামুল হক বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার, আপনি এই সংসদের অভিভাবক। তারা কেন এই ধরনের ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করেছেন, এজন্য আপনি তাদের এই সংসদে ডাকেন। তাদের তলব করে তথ্য চান। তারা যদি তাদের সংবাদের সত্যতা প্রমাণ দিতে পারে তাহলে, আমরা পদত্যাগ করব। আর প্রমাণ দিতে না পারলে তাদের শাস্তির বিধান করা হোক।’
এনামুলক হক নিজে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি ওই পত্রিকার বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছি। আমি সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেব।’
এই সংসদ সদস্য সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ১৬৬ বিধি অনুযায়ী এ নোটিশটি উত্থাপনের পর স্পিকার তা আমলে নিয়ে ১৬৮ বিধি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর জন্য নোটিশটি সংসদে ভোটে দেন। এতে সংসদ সদস্যরা ‘হ্যাঁ’-সূচক সম্মতি দিলে পরে তা বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে পাঠিয়ে দেন।
স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতা ছাড়াও বিশেষ অধিকার কমিটির সদস্যরা হলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সংসদের উপ-নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, রংপুর -৫ আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মৌলভীবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মো. শাহাব উদ্দিন, পিরোজপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. জিয়াউল হক মৃধা ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী।
এর আগে পঞ্চম সংসদে আওয়ামী লীগ দলী সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন ইউসুফকে বিমান বন্দরের ভিআইভি লাউঞ্জ ব্যবহারে করতে বাধা দেওয়ায় তিনি সংসদে বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্নের নোটিশ নেন। পরে তৎকালীন স্পিকার শেখ রাজ্জাক আলী সেটাকে বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে পাঠিয়েছিলেন বলে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে।
বাংলা৭১নিউজ/আরপি