বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা:
রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি মহল ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও মনগড়া বক্তব্য দিয়ে সুন্দরবন ধ্বংস হবে বলে গণমাধ্যমে তথ্য প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত তিনটি জায়গার মধ্যে পরিবেশগত এবং অন্যান্য সার্বিক দিক দিয়ে সবচেয়ে সুবিধাজনক ও গ্রহণযোগ্য হওয়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য রামপালকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ফজিলাতুন নেসার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেওয়া ‘ভিশন ২০৩০’ আওয়ামী লীগের রূপকল্প: ২০২১-এর প্রতিচ্ছবি। তারা ক্ষমতায় গেলে কী কী করবে রূপকল্পে তার দীর্ঘ ফর্দ দেওয়া হলেও কীভাবে কোন পদ্ধতিতে তা বাস্তবায়ন করা হবে, কীভাবে অর্থায়ন হবে তা স্পষ্ট নয়। এটি অনেকটা নির্বাচনী ইশতেহারের মতোই হয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি তাদের রূপকল্প ২০৩০-এ যে বিষয়গুলো উল্লেখ করেছে, তার অধিকাংশই বর্তমান সরকার ইতিমধ্যে পূরণ করেছে। আগামী অর্থবছরে বাকি কাজগুলো শেষ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপিকে মনে রাখতে হবে রূপকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজন উপযুক্ত কৌশল, যোগ্য নেতৃত্ব ও সুসংগঠিত দল। এর আগে অতীতের নেতিবাচক রাজনীতি ও অনিয়মতান্ত্রিক তৎপরতায় তারা ফিরে যাবে না—এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, এই ইশতেহার বাস্তবায়ন করতে হলে তাদের আগে ক্ষমতায় যেতে হবে। তারা সংসদীয় পদ্ধতি, গণভোট পদ্ধতিসহ আরও যেসব মৌলিক পরিবর্তন করার কথা বলছে, তার জন্য সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট লাগবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি তাদের শাসনামলে অনিয়ম-দুর্নীতি, জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতার দৃষ্টান্ত রেখেছে। এরপর ক্ষমতার বাইরে থেকে জ্বালাও-পোড়াওসহ অনিয়মতান্ত্রিক তৎপরতা দিয়ে যে নেতিবাচক ইমেজ তৈরি করেছে তা কাটিয়ে উঠে এতটা জনআস্থা অর্জন তাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ।
বিএনপির রাজনীতির সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, গ্রেনেড হামলা, সংসদ সদস্য হত্যাসহ নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজে যারা পারদর্শী, তারা আবার জনগণকে কী আশার বাণী শোনাবে? বিএনপির শাসনামলে পাঁচ বছরমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি। দুই-তিন বছরের পরিকল্পনা নিয়ে তারা রাষ্ট্র চালিয়েছে।
আওয়ামী লীগের রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১-এর প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে। দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে আমরা ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি। রূপকল্পের বাস্তব অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে আগামী দিনের বাংলাদেশকে বিশ্বে অগ্রগামী ও উন্নত জনপদে পরিণত করতে জাতিকে আমাদের এই মেয়াদের মধ্যেই রূপকল্প ২০৪১ উপহার দেব।’
জাতীয় পার্টির এ কে এম মাঈদুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এনজিও ব্যুরোর সঙ্গে নিবন্ধিত ২৫৩টি বিদেশি এনজিও রয়েছে। জানুয়ারি ২০১৬ থেকে এপ্রিল ২০১৭ এই সময়ে বিদেশি এনজিওগুলোতে ৩ হাজার ৭৯৮ কোটি ৩৭ লাখ ৩ হাজার ২৮৮ টাকা বিদেশ থেকে গ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস