বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: সরকার গঠনের মত আসন পেলে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মতামতের ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করবে ঐক্যফ্রন্ট।গতকাল শুক্রবার সম্পাদকদের প্রশ্নের জবাবে একথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড: কামাল হোসেন।
আগামী ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।যদিও ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুই মামলায় সাজা পাওয়ায় তার নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত।উচ্চ আদালত সাজা স্থগিত না করলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না।
আসন্ন নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন অংশ নেবেন না এমন কথা আগে থেকেই বলে আসছেন।যদিও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা চাচ্ছেন তিনি নির্বাচন করুক।এ দু’জন নির্বাচন করতে না পারলে ঐক্যফ্রন্ট সংখ্যাগরিষ্ট আসন পেলে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী? বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিতে নানা হিসেব-নিকেশ শুরু হয়ে গেছে।
দু’দিন আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নটির সূত্রপাত ঘটান। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘হু ইজ দেয়ার পিএম ফেইজ’।
এরপর থেকেই প্রশ্নটি ঘুরেপাক খাচ্ছে রাজনীতি সচেতন মানুষের মধ্যে। ওবায়দুল কাদের প্রশ্নটি সামনে নিয়ে এলেও ঐক্যফ্রন্ট নেতারা এ বিষয়ে কোনো কিছু বলেননি।
শুক্রবার সম্পাদকদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্যন্টের মতবিনিময়েও প্রশ্নটি উঠেছে। রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে মতবিনিময় হয়। জবাবে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মতামতের ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করবে ঐক্যফ্রন্ট।বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান।
তিনি জানান, মতবিনিময়ে এক সম্পাদক এ প্রশ্নটি করেন। প্রশ্নটি ছিল এ রকম যে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এ ধরনের জোট করে নির্বাচন করলে সরকারপ্রধান কে হবেন সেটি আগে জনগণকে জানানো উচিৎ। কেননা জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। পছন্দ-অপছন্দের বিষয় রয়েছে।
জবাবে কামাল হোসেন বলেছেন, নির্বাচনে বিজয়ী হলে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাবে তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করা হবে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আমি জানতে চাই, দেশবাসীও জানতে চায়; বলুন-প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? ড. কামাল হোসেন না তারেক রহমান?-কে হবেন? হু ইজ দেয়ার পিএম ফেইস? বিএনপিসহ কয়েকটি নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত দল নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সাত দফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়।
মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন নিউজ টুডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, হলিডে সম্পাদক সৈয়দ কামালউদ্দিন, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউএজ সম্পাদক নুরুল কবীর, আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান তৌফিক ইমরোজ খালিদী, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, দিনকাল সম্পাদক রেজোয়ান সিদ্দিকী।
এছাড়া এ মতবিনিময়ে অংশ নেন যুগান্তরের চিফ রিপোর্টার মাসুদ করীম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের আবু তাহের, বাংলাদেশের খবরের সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন, ইনকিলাবের মুন্সি আবদুল মান্নান, নিউজ টুডের মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, ডেইলি স্টারের সাখাওয়াত হোসেন লিটন, সমকালের লোটন একরাম, সাপ্তাহিকের গোলাম মোর্তজাসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রের সিনিয়র সাংবাদিকরা। ভয়েস অব আমেরিকার আমীর খসরু, রয়টার্সের সিরাজুল ইসলাম কাদির, এএফপির শফিকুল আলমও উপস্থিত ছিলেন মতবিনিময় অনুষ্ঠানে।
সভায় বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের মতামত শোনেন ও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, সম্পাদকদের সঙ্গে আমাদের আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে কী কী জিনিস দেখেছেন। সম্পাদকেরা মনে করেন এবার আমাদের (ঐক্যফ্রন্ট) বিরত থাকতে হবে, সবাইকে সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করতে হবে যেন জনগণ সত্যিকার অর্থে নির্ভয়ে স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
জোটের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, তানিয়া রব, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মনটু, সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মো. মনসুর আহমেদ।
এছাড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, শামা ওবায়েদসহ ঐক্যফ্রন্টের শরিক নেতারাও ছিলেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএম