বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: ঢাকার পান্থপথে হোটেলে ওলিও ইন্টারন্যাশনালে পুলিশের অভিযানের মধ্যে আত্মঘাতী হওয়া জঙ্গি সাইফুল ইসলাম জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান ঘিরে হামলার পরিকল্পনায় ছিল বলে পুলিশের ধারণা।
পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, “ধানমণ্ডি বত্রিশ নম্বরকে কেন্দ্র করে অগাস্টের মিছিলে তারা আত্মঘাতী বোমা হামলা করবে এবং শত শত লোক মেরে ফেলবে- এ ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছিল।”
আজ মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ভবন থেকে মাত্র ৩০০ মিটার দূরে ওই ভবনে অভিযান চালায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও সোয়াট সদস্যরা।
সকাল পৌনে ১০টার দিকে চারতলা হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনাল থেকে বিকট বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ পাওয়া যায়। বিস্ফোরণে হোটেলের চতুর্থ তলার রাস্তার দিকের অংশের দেয়াল ও গ্রিল ধসে নিচে পড়ে। পরে চতুর্থ তলায় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে একজনের লাশ পাওয়া যায়।
পরে আইজিপি শহীদুল হক এক ব্রিফিংয়ে বলেন, নিহত ‘জঙ্গির’ নাম সাইফুল ইসলাম। তার বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া থানায়। তার বাবা একটি মসজিদের ইমাম। ওই জঙ্গি নিজেও মাদ্রাসার ছাত্র ছিল, খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ছিল, এক সময় শিবির করত।
“জামাত শিবির না হলে আজ জাতির পিতার মৃত্যু দিবিসে শোক দিবসে আরেকটি ঘটাবে, এটা ঘটাতে পারত না। যারা বঙ্গবন্ধুকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেছে, তারাই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আজকে এই জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করেছিল।”
আইজিপি বলেন, “আমাদের পুলিশ সেই পরিকল্পনা নস্যাত করে দিয়েছে। ওই জঙ্গি নিহত হয়েছে।”
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এক সময় শিবির করা সাইফুল নব্য জেএমবির হয়ে কাজ করছিলেন। অগাস্টে ‘বড় ধরনের নাশকতা ঘটানোর পরিকল্পনা’ চলার তথ্যের ভিত্তিতেই ওই হোটেলে তারা সাইফুলের সন্ধান পান।
অগাস্ট মাসে আরও কোনো হামলা পরিকল্পনার তথ্য আছে কি না জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, “অগাস্ট মাস আসলে আমরাও সতর্ক হই, অনেক ঘটনা ঘটেছে আপনারা জানেন। অগাস্ট মাসে জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে, একুশে অগাস্ট ঘটানো হয়েছে, ১৭ অগাস্ট সিরিজ বোমা হয়েছে। সেটা মাথায় রেখেই আমরা গোটা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি।”
ঢাকার নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর ফলেই হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালে জঙ্গি আস্তানার তথ্য মিলেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ কমিশনার সানোয়ার হোসেন জানান, অভিযানের সময় ওই জঙ্গি দুটি বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের সদস্যরা ভেতরে একটি ট্র্যাভেল ব্যাগে বোমার সন্ধান পায়।
“ব্যাগ থেকে বের না করে ওই অবস্থাতেই নিয়ন্ত্রিতভাবে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। ভেতরে তল্লাশি করে দেখেছি, আর কোনো অস্ত্র বা বিস্ফোরক নেই। এখন ক্রাইম সিন ইউনিট কাজ করছে।”
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (গোপনীয় শাখা) মনিরুজ্জামান বলেন, ওই হোটেলে পুলিশের অভিযান শেষ হয়েছে। তবে আশপাশের কিছু জায়গায় পুলিশের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি