চৈত্র মাসের শেষে হঠাৎ কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে শেরপুরের জনপদ। রোববার ভোর থেকে মাঝারি ও ঘন কুয়াশার কারণে সামান্য দূরের জিনিসও দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল না। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলেছে কুয়াশার রাজত্ব।
লকডাউনের কারণে দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে না। তবে রোববার সকাল থেকে জেলার সড়ক ও মহাসড়কে ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলেছে ধীরগতিতে।
কুয়াশামাখা চৈত্রের সকালে প্রাতঃভ্রমণে আসা অনেকেই বলেছেন এই অসময়ে এ ধরনের কুয়াশা রোগ-বালাইয়ের লক্ষণ। অনেকেই এ কুয়াশা আগাম বন্যার লক্ষণ হিসেবে মনে করছেন। চৈত্র মাসের শেষদিকে এমন ঘনকুয়াশা পড়তে ইতোপূর্বে দেখেননি অনেকেই। এটা ঋতুর বৈচিত্র্যতা বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন।
এখন মাঝে মধ্যেই একদিকে শিলাবৃষ্টি ও ঝড় হচ্ছে এবং অন্যদিকে গরমের মাত্রা বাড়ছে। আবার কখনও হালকা শীতের পরশও লাগছে।
এদিকে রোববার ভোরে কুয়াশার মাখামাখিতে শেরপুরে এক অন্যরকম প্রাকৃতিক পরিবেশ বিরাজ করায় তা মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে এবং তারা বিস্মিতও হয়েছেন।
শেরপুরে শহরের চকপাঠক এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ লেহাজ উদ্দিন বলেন, আজ চৈত্র মাসের শেষদিকে রোববার এরকম কুয়াশা আমরা এ বয়সে আর দেখি নাই। এ কুয়াশার লক্ষণে বোঝা যায় অসুখ-বিসুখ বাড়বে এবং অকালেই বন্যা হবে- এটা বোঝা যাচ্ছে।
প্রাতঃভ্রমণে আসা শেরপুর স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত মশিয়ুর রহমান বলেন, অসময়ের কুয়াশাটা প্রকৃতি আমাদের মাঝে যেন একটা বিরূপ মনোভাব পোষণ করছে। এ বিষয়টা আল্লাহপাক ভালো জানেন। এ সময়ে কুয়াশাটা কাম্য নয়। কুয়াশাটা সাধারণত শীতকালেই হয়। এ সময়ে কুয়াশাটা আসছে এবং কেন আসছে। এটা প্রকৃতিতে কতটুকু ফলপ্রসূ বয়ে আনবে এটা আসলে অনুধাবন করতে পারছি না।
হোটেল কর্মচারী মোবারক আলী বলেন, চৈত্র মাসে এমন ঘনকুয়াশা আমার বয়সে দেখি নাই। যে কুয়াশা পড়ছে কাছে থেকেই মানুষ এবং গাড়ি দেখা যাইতেছে না।
চকপাঠকের বাসিন্দা দোকানদার আব্দুল হাকিম বলেন, চৈত্র মাসে সকাল থেকে এমন কুয়াশা আমরা জীবনেও দেখি নাই।
প্রাইভেটকারচালক জুয়েল মিয়া জানান, গাড়ি নিয়ে ময়মনসিংহ গিয়েছিলাম। ময়মনসিংহে যাওয়া আসার পথে চৈত্র মাসের কুয়াশার কারণে সময় বেশি লাগছে আর গাড়ি চালানো টাফ লেগেছে।
প্রাতঃকালীন ভ্রমণে বের হওয়া গৃহবধূ অর্পিতা ঘোষ বলেন, হাঁটছি আর ভাবছি চৈত্র মাসে এমন কুয়াশা তো আর কোনো দিন দেখি নাই।
অ্যাম্বুলেন্স চালক বাবু বলেন, খুব কুয়াশার কারণে রোববার সকালে আসতে খুব সমস্যা হয়েছে। কুয়াশার কারণে কিছু দেখা যাচ্ছিল না।
বাংলা৭১নিউজ/এআরকে