বাংলা৭১নিউজ,শাহরিয়ার শাকির, শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক সভায়, শেরপুরে কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীকে জেলা আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব প্রেরন এবং শেরপুর ৩ আসনের এমপি প্রকৌশলী ফজলুল হক চানসহ ৫ নেতাকে দল থেকে বহিস্কার, ও নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকে শেরপুরে আওয়ামী লীগে উত্তজনা দেখা দিয়েছে।
এ ঘটনার পর আজ রোববার দুপুরে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ জেলা সদরে ও নকলায় বিক্ষোভ ও ঝাড়ো মিছিল করেছে। একই সাথে হুউপ আতিউর রহমানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে। গত রাতেই এক ঘন্টা ঢাকা- শেরপুর সড়ক এক ঘন্টা অবরোধ করে রাখা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক এর নেত্রত্বাধীন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, জেলা আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, আমরা নিয়ম মেনেই কৃষিমন্ত্রী ও সংসদ সদস ফজলুল হক চাঁনসহ অন্যনান্য নেতাদের বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিষয়টি দলীয় সভানেত্রীর কাছে সাক্ষাৎ করে বলতে চাই। এ জন্য দলের সভাপতিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মতিয়া চৌধুরীই শেরপুরের সকল গন্ডগোলের মুল হোতা। তার মদদেই শেরপুর একটি মহল আওয়ামী লীগ ও শেরপুরের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করছে। তাই আমরা মতিয়া চৌধুরীর প্রত্যাহার চেয়েছি।
অপরপক্ষে কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীকে জেলা আওয়ামীলীগের সকল কার্যক্রম থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব প্রেরন এবং শেরপুর ৩ আসনের এমপি প্রকৌশলী ফজলুল হক চানসহ ৫ নেতাকে দল থেকে বহিস্কার, ও নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রতিবাদে ২০ মে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের একাংশ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হুইপ আতিউর রহমানের কুশপুত্তিলিকা দাহ করে এবং শহরে ঝাড়ো মিছিল করে।
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত রয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমতি ছাড়া কোন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার, দলের কোন শাখা ভেঙ্গে দিতে পারবে না। এছাড়া শেরপুর জেলা আওয়ামীলীগ একতরফাভাবে করা হয়েছে। এ কমিটিকে পুনর্গঠন করার জন দলের সভানেত্রীর কাছে আবেদন করা হলে তা দলের ট্রাইবু নালে বিচারাধীন আছে। সেখান থেকে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত আমরা ওই কমিটির সভায় যাই না।
তিনি বলেন, হুইপ তার দূর্ণীতিকে ঢাকা দেয়ার জন্যই এ ধরনের বিতর্কিত কাজ করছে। কাজেই দ্রুত এ ধরেনর সিদ্ধান্ত বাতিল করে দল পূনর্গঠন, মেয়াদোত্তীর্ণ শেরপুর সদর, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলা কমিটি ভেঙ্গে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার আহ্বান জানান। তা-না হলে দ্রুতই দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলা হবে।
এসময় শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছানোয়ার হোসেন ছানু, ভাইসচেয়ারম্যান বায়োযীদ হাসান, শেরপুর জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার, সিনিয়র নেতা এডভোকেট আখতারুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শামসুন্নাহার কামাল, জেলা যুবলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মো: হাবিবুর রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শেরপুরে জেলা আওযামী লীগের গতকাল ১৯ মে সন্ধায় চকবাজার দলীয় কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয় সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিউর রহমান আতিকের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শেরপুর ২ আসনের এমপি এবং কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীকে জেলার সকল কার্যক্রম থেকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এছারা শেরপুর-৩ আসনের এমপি ফজলুল হক চানঁ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সামছুর নাহার কামাল, নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউল হক, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক ও নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ কে জেলা আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত হয়।
এছারা নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
দলিয় সুত্রে জানা গেছে সভায় ৭১ সদস্যের মধ্যে ৫২ জন সদস্য সভায় উপস্থিত ছিলেন। একটি সুত্রে জানা গেছে দলের বিভিন্ন কার্যক্রম থেকে দির্ঘদিন অংশ না নেওয়া সহ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী গ্রুপিংয়ে মদদ দেওয়ার অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেওয় হয়েছে বলে জানা গেছে। এরপর থেকেই উভয়গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস