মুন্সীগঞ্জে শিশুকে অপহরণ করে নিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় পাঁচ আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক ড. মো. আলমগীর এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সদর উপজেলার ফুলতলা গ্রামের সামছুল হক প্রধারে ছেলে রবিউল (২২), একই এলাকার মৃত হযরত আলরি ছেলে আবুল (২২), রিয়াজুল হক প্রধানের ছেলে ময়না, ইসহাকের ছেলে আনোয়ার ও দক্ষিণ চর মসুরা গ্রামের মন্নান খা এর ছেলে হান্নান।
রায়ের সময় আসামিদের মধ্যে আবুল, ময়না ও আনোয়ার সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে আসামিদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। অপর আসামি রবিউল ও হান্নান পলাতক আছেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হাছান ছারওয়াদী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৩১ আগস্ট মামলার বাদী ঝর্না বেগম ও তার স্বামী নাসির উদ্দিন ব্যাপারী নিহত আবু তকিরকে (১০) তাদের মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার ফুলতলা গ্রামের বাড়িতে একা রেখে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলা শহরে মার্কেট করার জন্য যান। পরে ওই দিন বিকালে বাড়িতে ফিরে তারা আর তকিরকে পাননি। ছেলেকে না পেয়ে ঘটনার পরের দিন মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি অপহরণ মামলা করেন তারা।
তকির নিখোঁজ হওয়ার আগে প্রতিবেশী আসামি রবিউলের সঙ্গে তকিরের কথা বলতে দেখেন আরেক প্রতিবেশী অর্নব। এ ঘটনায় পুলিশ তকিরের মায়ের দেওয়া অপহরণ মামলায় প্রতিবেশী রবিউলকে আটক করা হয়। রবিউল জানান আবুলের বাড়ির পশ্চিম পাশের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তকিরকে। পরে গেলে তাদের দেওয়া তথ্যে আসামি ময়নার বাড়ির গরু ঘরের গোবরের গর্ত থেকে তকিরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এরপর রবিউলকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে তকির হত্যা মামলার চাঞ্চল্যকর তথ্য। রবিউল দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিলে তার জবানবন্দির আলোকে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে মামলা তদন্ত করে ওই পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। ওই মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রদানের ভিত্তিতে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
এ ব্যাপারে ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি সিরাজুল ইসলাম পল্টু বলেন, ১০ বছরের শিশু আবু তকির হত্যা মামলায় আসামি রবিউলসহ পাঁচজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ