বাংলা৭১নিউজ, ঝিনাইদহ: শীতকালীন সবজি শিম চাষ করে বিঘা প্রতি লাখ টাকা লাভের আশা করলেও মাঠের পর মাঠ শিমখেতের ফুল পচে যাওয়ায় ধরছে না শিম। গাছে ভাইরাস ও পচনরোগ দেখা দেয়ায় শিমচাষিদের এখন মাথায় হাত। লাভের বদলে লোকসান গুণছেন কৃষকরা।
চাষিদের ভাষ্য, দুই সপ্তাহ ধরে শিম বাজারে উঠতে শুরু করেছে। এ মুহূর্তে গাছে ভাইরাস ও পচনরোগ দেখা দেয়ায় বিপদে পড়েছেন তারা। সেই সঙ্গে অনেক গাছে এখনও শিম ধরেনি।
লাভজনক এ সবজি চাষ করে এবার কৃষকরা পথে বসেছেন। তাদের অভিযোগ, এ বিষয়ে কোনো খোঁজ রাখেনি কৃষি অফিস। কৃষকদের অভিযোগ স্বীকার করে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বিরূপ আবহাওয়ার করণে এবার শিমচাষে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে শিমখেতগুলো ঘুরে দেখা যায়, সবজি ভান্ডারখ্যাত ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার কয়েকহাজার কৃষক এবার শীতকালীন সবজি শিমের আগাম চাষ করেন। ভাইরাস রোগের জন্য গাছের পাতা হলুদ, ছিদ্র ও বিবর্ণ হয়ে গেছে। দুর্বল হয়ে পড়ছে গাছ। ফলে শিম ধরছে না। সেই সঙ্গে অনেক গাছে শিম হলেও তা হলুদ হয়ে ঝরে পড়ছে।
এছাড়া শিমের কিছু জমিতে পানি জমে যাওয়ায় পচন শুরু হয়েছে। পচন ও ভাইরাসের জন্য এবার চরম লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা। কীটনাশক ও ওষুধ ছিটিয়েও লাভ হচ্ছে না তাদের।
শীতের শুরুতে ভালো দামে ফসল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা ছিল কৃষকদের। ফুল আসার পরপরই এক সপ্তাহের মধ্যে শিম তুলে বাজারে বিক্রি করা যায়। কিন্তু এবার কোনো শিম বাজারে তুলতে পারেননি এ অঞ্চলের কৃষকরা।
এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষক কামাল মিয়া বলেন, জমিতে ফুলে ফুলে শিম গাছ ভরে উঠলেও অজ্ঞাত রোগে সব ফুল ঝরে পড়ছে। মাঠে দেখা দিয়েছে পচন ও ছত্রাকজনিত রোগ। আবার শিমখেতের গোড়াতেও দেখা দিয়েছে পচন রোগ। কোনো কীটনাশক ব্যবহার করেও উপকার পাচ্ছি না।
জানতে চাইলে ভাটই বাজারের কৃষক শেখ আলম, আমানুল মণ্ডল ও রাব্বি বিশ্বাস জানান, ১ বিঘা জমিতে শিমচাষ করতে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে শুরু হয় শিমের চাষ। ৪ থেকে ৬ মাসের মাথায় শিমের ফুল-ফল আসতে শুরু করে। ভালো ফলন হলে বিঘা প্রতি লাখ টাকার শিম বিক্রি করা যায়। কিন্তু এবার সবার মাথায় হাত।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার বলেন, শৈলকূপায় এবার ৩৫০ হেক্টরের বেশি জমিতে শিমের চাষ হয়েছে। তীব্র গরম, অতিবৃষ্টি এসব কারণে শিমের ফুল ঝরে যায়। বিরূপ আবহাওয়ায় আবার কিছু গাছেও পচন ধরেছে। ভালোভাবে শীত পড়তে শুরু করলে শিমের ফলন ভালো হবে। তখন কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন স্থানীয় কৃষকরা।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস