বাংলা৭১নিউজ,( গোদাগাড়ী)প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উচ্চ শিক্ষিত, বেকার যুবক, জনপ্রতিনিধি, কৃষকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ উচ্চ ফলনশীল পেঁপে ও আম বাগানের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মালেকও কয়েকজন শিক্ষিত বেকার যুবককে সাথে নিয়ে পেঁপে ও আম বাগানের পরীক্ষামূলক কাজ শুরু করেন।
পেঁপে হলো উচ্চ মূল্যের একটি লাভজনক ফসল। পানি কম লাগে। একবার লাগানো হলে ২ থেকে ৩ বছর ফল পাওয়া যায়। বিঘা প্রতি প্রায় ৪০০ টি গাছ লাগানো যায়। প্রতি গাছে বছরে প্রায় ১মন থেকে ১মন ২৫ পেঁপে ধরে। এক বিঘা জমিতে বছরে প্রায় ৬০০ মন পেঁপে হয়, যার বাজার মূল্য প্রতি কেজি গড়ে ১০ টাকা কেজি হলে মোট প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা হয়। উৎপাদন খরচ অনেক কম কিন্তু লাভজনক। বিঘা প্রতি খরচ হয় মাত্র ১৫-২০ হাজার টাকা ।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, পেঁপে একটি লাভজনক ফসল, সাথী ফসল হিসেবে বেগুন, শসা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, মূলা, মরিচ এবং সবজি চাষ করা যায়। সহজে পচে যায় না। কাঁচা পাকা যে কোনো সময় খাওয়া যায়। পেঁপে ঔষুধিগুন সমৃদ্ধ খাবার। আমরা গোদাগাড়ীর বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আম ও পেঁপে আবাদ বৃদ্ধির চেষ্টা করছি। অনেক শিক্ষিত যুবক পেঁপে চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারে।
গোদাগাড়ীতে ২০ হেক্টর জমিতে পেঁপে বাগান করা হয়েছে এবং ৬শ ৭৬ হেক্টর আম বাগান রয়েছে।গোদাগাড়ী বরেন্দ্র এলাকার আম খুব সুস্বদু, মিষ্টি হওয়ায় বেশ চাহিদা রয়েছে। আমের বাম্পার ফলন আশা যাচ্ছে। আম চাষীরা আমের ভাল দাম পাবেন।
আম (ইংরেজি- Mango), ভারতীয় উপমহাদেশীয় এক প্রকারের সুস্বাদু ফল। কাঁচা অবস্থায় রং সবুজ এবং পাঁকা অবস্থায় হলুদ রং হয়ে থাকে। আম ভারতের জাতীয় ফল হিসাবে পরিচিত।
বাংলাদেশ এবং ভারতে যে প্রজাতির আম চাষ হয় তার বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica। এটি Anacardiaceae পরিবারের সদস্য। তবে পৃথিবীতে প্রায় ৩৫ প্রজাতির আম আছে। আমের বিভিন্ন জাত আছে যেমন ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসা, অরুনা, আম্রপালি, মল্লিকা, সুবর্নরেখা, মিশ্রিদানা, নিলাম্বরী, কালীভোগ, কাঁচামিঠা, আলফানসো, বারোমাসি, তোতাপূরী, কারাবাউ, কেঊই সাউই, গোপাল খাস, কেন্ট, সূর্যপূরী, পাহুতান, ত্রিফলা, হাড়িভাঙ্গা, ছাতাপরা, গুঠলি, লখনা, আদাইরা, কলাবতী ইত্যাদি।
ভারতের মালদহ , মুর্শিদাবাদ-এ প্রচুর পরিমাণে আম চাষ হয়ে থাকে। আম গাছকে বাংলাদেশের জাতীয় গাছের প্রতীক হিসেবে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম চাষ বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে। আমকে বলা হয় ‘ফলের রাজা’এবং আম গাছকে বলা হয় জাতীয় গাছ।
মাটিকাটা উজানপাড়া এলাকার আম বাগানের মালিক মোঃ হযরত আলী জানান, আমার দুটি বড় আম বাগান রয়েছে, বিভিন্ন ধরনের আম রয়েছে। ভালই আম ধরেছে, কিন্তু আমি শঙ্কিত করোনা ভাইরাসের কারণে বাইরের পাইকার যদি না আসে তবে আম বিক্রি করা সম্ভাব হবে না।
হারুন নামে এক আম চাষী বলেন, আম বাগান নিয়ে সমস্যায় আছি এ সময় অনেক পাইকার বাগান কেনার কেনার জন্য আসেন, কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে কেউ আসঝেন না, স্থানীয় ২।১ জন আসলেও যে দাম বলছেন তাতে ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে এ নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মালেক বলেন, আমি তো সারাজীবন সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করে আসচ্ছি, মানুষের অগাদ ভালবাসাও পেয়েছি। মানুষ আমার জন্য কী ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন সেটা দেখেছি অনেক বার। আমার তো অবৈধ ইনকাম নেই, কালো টাকার সম্পদের পাহাড় নেই।
তাই চলার জন্য কয়েকজন শিক্ষিত বেকার যুবককে সাথে নিয়ে তাদেরকে উৎসাহ যোগানোর জন্য ৫ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক পেঁপে ও আমের বাগান করেছি। বেকার যুবকেরা স্বালম্বী হতে পারে কি না। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম সোমবার বাগানে এসেছিলেন, পরামার্শ দিচ্ছেন।
তবে এলাকার আম চাষীরা আতংকিত রয়েছেন করোনা ভাইরাসের কারণে আম বিক্রি নিয়ে। তাদের শঙ্কা, এই করোনাকালে ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকার আম ব্যবসায়ীরা আম ক্রয় করতে আসবেনতো?
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ