সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-মামলা ও নির্বিচারে গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাজ’। সমাবেশ থেকে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও দ্রুত সব ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
সোমবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে শিক্ষকদের এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সাইদ ফেরদৌস।
সমাবেশ শেষে দেশাত্মবোধক গানে গানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত স্থানগুলোতে পদযাত্রা করেন শিক্ষকরা। এর আগে, শাহবাগে জড়ো হয়ে সেখান থেকে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আসেন তারা। কর্মসূচির শুরুতে তারা এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
সমাবেশে ড. সাইদ ফেরদৌসবলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ ভাবা হচ্ছে। সেই শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের খোলনলচে পাল্টে দিতে এসেছে। স্বাধীনতার পর থেকে গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রে যে লাগাতার নৈরাজ্য চলেছে, হলগুলোতে যে সুপরিকল্পিত নিপীড়ন চলেছে, সেসব পাল্টে নতুন ইতিহাস লেখার পথ তৈরি করেছেন শিক্ষার্থীরা। সেই শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দাবির সঙ্গে আমরা সমর্থন জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মৃত্যুতে জড়িতদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে শিক্ষার্থীদের দাবিকে সমর্থন করি। কিন্তু সবার আগে হত্যা বন্ধ হোক।’
সমাবেশে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল হাসিব চৌধুরী বলেন, ‘৬৯ সালে অধ্যাপক শামসুজ্জোহা ছাত্রদের রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন।
আমরা এখানে যারা জমায়েত হয়েছি আমরা শহীদ শামসুজ্জোহার উত্তরসূরি। আমাদের যে সন্তানরা যে ছাত্ররা অধিকারের জন্য বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে লড়াই করছে তারাই হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরি। এ লড়াইয়ের ফলাফল কী হবে সেটা ইতিহাসই আমাদের নির্দেশ করছে। আর আমাদের করণীয় কী সেটা ইতিহাস আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ছাত্রদের ওপর হামলা-মামলা বন্ধ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় ফিরতে দিতে হবে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক সায়মন রেজা, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ নাহিদ নেওয়াজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মাসুদ ইমরান, ঢাবির আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস, গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রীতু শরমিন, স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তামান্না মাকসুদ ও ঢাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুনসহ প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস