বাংলা৭১নিউজ,শামছুর রহমান শিশির, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ধর্ষণের মাত্রা উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। উপজেলার জিগারবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা, পোরজনা ঘোষপাড়ায় প্রতিবন্ধী কিশোরীর ধর্ষণের রেশ কাটতে না কাটতে আবারও শাহজাদপুর সরকারি কলেজের ডিগ্রি ৩য় বর্ষের ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষক প্রভাবশালী এনজিও কর্মকর্তা। তাকে রক্ষায় মরিয়া প্রভাবশালীরা। ফলে মামলা করেও সুবিচার পাচ্ছেনা ক্ষতিগ্রস্থ মেয়েটি। গত শনিবার রাতে এ ঘটনায় শাহজাদপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা রেকর্ড হয়েছে। আর গত ২৩ মার্চ রোববার রাতে শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া চন্দ্রপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে ।
ধর্ষিতা মেয়েটি শাহজাদপুর সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বিচার না পেয়ে ঘরে বসে শুধ দু‘ুচোখের জল ফেলছে আর ক্রমশ বেচে থাকার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলছে। রোববার সকালে এমনটাই জানালেন তার বাবা পোতাজিয়ায় অবস্থিত শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভ্যাক্সিনেটর রজব আলী। তিনি জানান,একই গ্রামের প্রতিবেশি আনোয়ারের ছেলে ও যশোর জেলার মনিরামপুর ব্র্যাক অফিসের পশু প্রজনন বিভাগের ম্যানেজার সেলিম মিয়া তার মেয়েকে বিয়ের প্রতিশ্রতি দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। এরপর দেখা করার অজুহাতে তাকে একাধিকবার জোবপূর্বক ধর্ষণ করে। সম্প্রতি মেয়েটি বিয়ের জন্য চাপ দিলে লম্পট সেলিম এ বিষয়ে গোপনে কথা বলার অজুহাতে গত ৪ মার্চ তাকে আবারও জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে পালিয়ে যায়।
নিরুপায় হয়ে তারা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মাতবরদের কাছে বিচার প্রার্থনা করে। তারা বিচার দেয়ার নামে নানা ভাবে কালক্ষেপণ করতে থাকে। অবশেষে মেয়েটি বাধ্য হয়ে গত ২৫ মার্চ সিরাজগঞ্জ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে লম্পট এনজিও কর্মকর্তা সেলিম সহ ৫ জনকে আসামী করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। বিজ্ঞ বিচারক এ মামলাটি এজাহার হিসাবে গন্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শাহজাদপুর থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। শাহজাদপুর থানা পুলিশও মামলাটি এজাহার ভূক্ত করতে গরিমশি করতে থাকে।
এ অবস্থায় মেয়েটির সুবিচার পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সাংবাদিকরা এ বিষয়ে দৌড়ঝাপ শুরু করলে শাহজাদপুর থানা পুলিশ রাতেই মামলাটি এজাহার ভূক্ত করলে লম্পট ধর্ষক সেলিমকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি। ফলে মেয়েটি এখনও ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে মেয়েটির পরিবার চরম অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছে। এ ব্যাপারে শাহজাদপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রাকিবুল হুদা জানান, আদালতের নির্দেশে মামলাটি শাহজাদপুর থানায় এজাহার হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হলেই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে পোতাজিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, ধর্ষক সেলিম এলাকা ছেড়ে উধাও থাকায় বিচার দেয়া সম্ভব হয়নি।
তিনি আরো বলেন এ ব্যাপারে আদালতে মামলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থরা যাতে ন্যায় বিচার পায় তিনি সে বিষয়ে সহযোগীতা প্রদানের আশ^াস দেন। এ ব্যাপারে ধর্ষক সেলিমের একাধিক মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও সে রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার বোন শিল্পী খাতুন ও ভগ্নীপতি শাহীন আলম বলেন, এ বিষয়ে আদালতে মামলা হয়েছে। তারা মামলার রায়ের প্রত্যাশায় থাকবেন। এদিকে কলেজ ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় শাহজাদপুর সরকারি কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসোন্তষ বিরাজ করছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস