বাংলা৭১নিউজ, বেনাপোল প্রতিনিধি: যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়ায় যৌতুকের দাবিতে শুক্রুবার দিবাগত রাতে স্ত্রী জোহরা খাতুনকে (৩৪) পিটিয়ে হত্যা করে লাশ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়েছে স্বামী সহ পরিবারের নদস্যরা।
জোহরা খাতুন বেনাপোল পোর্ট থানার বালুন্ডা গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে। তার স্বামী রিপন হোসেন শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সাতভাইপাড়ার মোসলেম গাজীর ছেলে।
প্রতিবেশী ও জোহরার স্বজনরা জানান, প্রায় ১৭ বছর আগে রিপনের সঙ্গে জোহরা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী রিপন যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী জোহরাকে ব্যাপক নির্যাতন করতে থাকেন।
প্রায়শই রিপনের চাহিদামতো যৌতুক দিতে হতো। এনিয়ে পারিবারিকভাবে ও গ্রাম্য শালিস বসেছে অনেকবার। কিন্তু বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে জোহরা ও তার বাপের বাড়ির লোকজন অনেক টাকা খরচ করে রিপনকে বিদেশে পাঠিয়ে দেন। সেখান থেকে দুই বছর আগে বাড়ি এসে আবার স্ত্রী জোহরার ওপর নির্যাতন করতে থাকেন রিপন। মার সহ্য করতে না পেরে জোহরা কয়েকবার বাপের বাড়িতে চলে যান। রিপন আবার নানা কৌশলে তাকে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু কয়েকদিন স্বাভাবিক থাকার পর আবার শুরু হয় নির্যাতন।
তারা জানান, যৌতুক নিয়ে আবারো শুক্রুবার রাত দশটায় জোহরাকে ব্যাপক মারপিট করেন স্বামী রিপন। মারপিটের এক পর্যায়ে জোহরা মারা যান। এই হত্যাকান্ডকে ‘আত্মহত্যা’ বলে প্রচার করার জন্য ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয় মরদেহ। বাড়িতে কান্নাকাটি দেখে আশেপাশের লোকজন এসে লাশ উদ্ধার করেন।
জোহরার ছেলে হৃদয় (১৩) বলে, ‘কাল রাতে আব্বা আমার মাকে খুব মেরেছে।’
জোহরার বাবা নুর ইসলাম ও মা মেহেরুন জানান, জামাইকে অনেক টাকা, জিনিসপত্র জামাইকে দেওয়ার পরও নির্যাতন বন্ধ হয়নি।
নুর ইসলামের আকুতি , ‘সে আমার মেয়েকে হত্যা করে লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমরা উপযুক্ত বিচার চাই।’
বাগআঁচড়া পুলিশ তদšত কেন্দ্রের এসআই সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘সুরতহাল রিপোর্টে নিহতের শরীরে আঘাতের অনেক চিহ্ন পাওয়া গেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদšেতর জন্যে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
এ ব্যাপারে শার্শা থানায় মামলা হয়েছে জানিয়ে এসআই সাজ্জাদুর জানান, ঘটনার পর থেকেই রিপন তার পরিবারের লোকজন বাড়িছাড়া।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস