বাংলা৭১নিউজ, এম হারুন অর রশীদ, শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ও মোক্তারেরচর ইউনিয়নে পদ্মা নদী ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। একরাতে ১৫টি বাড়ি ঘর ও ৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বহু গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েগেছে। ঝুকিতে রয়েছে ওয়াপদা লঞ্চঘাট ও আলআরাফ জামে মসজিদ । এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্থরা সরকারী ভাবে কোন সহায়তা পায়নি বলে অভিযোগ করেছে।
সরেজমিন ঘুরে ও ওয়াপদা ঘাটের আঃ লতিফ খান জানান, নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের চর নড়িয়া ও মোক্তারেরচর ইউনিয়নের সাহেবেরচর, ওয়াপদা লঞ্চঘাট চন্ডিপুর লঞ্চঘাট সহ বিস্তীর্ন এলাকা জুড়ে পদ্মানদী ভয়াবহ ভাংগন দেখা দিয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পদ্মা এখন উত্তাল। গত রোববার গভীর রাতে ওয়াপদা লঞ্চঘাটে ৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রাক্ষুসী পদ্মা নদীগর্ভে বিলীন হয়েগেছে। ব্যবসায়ীরা হলেন, মতিউর রহমান শিকারীর মোহাম্মদ আলী শরীফ, আলী হোসেন চৌকিদারের, বাচ্চু দেওয়ান, ইসমাইল খান ও জীবন মিয়া।রোববার রাত অনুমান ৩টায় জোয়ারের সময় নদী উত্তাল হয়ে মুহুর্তের মধ্যে সাহেবেরচর গ্রামে প্রায় ১৫টি বাড়ি ঘর গাছপালা,ফসলী জমিসহ বিভিন্ন মূল্যমান মালামাল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যাদের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে তারা হলেন, মঞ্জু খান, আঃ রব খান, মোতাহার হোসেন খান, আবুল ছৈয়াল, নুরু ছৈয়াল, আলী আহম্মেদ মাষ্টার, নুরজাহান বেগম, সুলতান হাওলাদার, বাবুল ছৈয়াল, আঃ রব হাওলাদার, আঃ কাদের জমাদ্দার, মোসলেম জমাদ্দার, রাসেল ছৈয়াল, আঃ মজিদ জমাদ্দার ও বসু জমাদ্দার।
এ সকল বাড়ি ঘর গাছপালা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কোন মালামাল রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ঝুকিতে রয়েছে ওয়াপদা লঞ্চঘাটের আল আরাফা জামে মসজিদ সহ ওয়াপদা বাজারের প্রায় অর্ধশতাধিক দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ভাংগন কবলিত এলাকার মানুষ আতংকিত রয়েছে। নদীতে জোয়ার এলেই নদী উত্তাল হয়ে বাড়ি ঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ শত শত একর ফসলী জমি বিলীন হয়ে যায়। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ভাংগনে ঐ সব এলাকার হাজার হাজার পরিবারে ঘরবাড়ি ফসলি জমি গাছপালা সহ মূল্যবান সম্পদ পদ্মা গ্রাস করে নিয়ে যায়। ফলে শরীয়তপুর জেলার মানচিত্র ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসছে।
এছাড়া চর নড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি ভবন কয়েকদিন পূর্বে সম্পূর্ণ ভাবে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী পার্শ্ববতী নুরু মিয়ার বাড়িতে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান কার্যক্রম চলছে। ভাংগন কবলিত এলাকার মানুষের অভিযোগ পদ্মার ভাংগন থেকে তাদের কে রক্ষা করতে কেউ এগিয়ে আসেনি। স্থায়ী ভাবে পদ্মার ভাংগন থেকে রক্ষা করতে একটি বেড়িবাধ নির্মানের জন্য দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসি।
এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ আঃ রব হাওলাদার বলেন, প্রতি বছরই নদীতে আমাদের বাড়ি ঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ সবকিছু নিয়ে যায়। গত রাতে ওয়াপদা বাজারের ৫টি দোকানপাট নিয়ে গেছে। সরকার এ ব্যাপারে আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা খুবই কষ্টে আছি। আমরা চাই সরকার এ এলাকায় একটি স্থায়ী বেড়িবাধ নির্মাণ করে আমাদেরকে রক্ষা করবে।
নুরজাহান বেগম বলেন, পদ্মায় ১৫টি বাড়ি ঘর গাছপালা ও ঘরের মালামাল নদীতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। কোন মালামাল রক্ষা করতে পারিনি।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইয়াসমীন নদী ভাংগনের কথা স্বীকার করে বলেন, ভাংগন কবলিত এলাকার তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে। তালিকা তৈরীর পরে এদরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হবে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস