শরিয়াহভিত্তিক বন্ড ‘সুকুক’ চালুর জন্য আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য সরকারের বিনিয়োগ সুকুক গাইডলাইন, ২০২০ অনুসারে সুকুক ইস্যুর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্পেশাল পারপাস ভেহিকল (এসপিভি) এবং ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বলে জানা গেছে।
শরিয়াহভিত্তিক নিরাপদ বিনিয়োগ ইন্সট্রুমেন্টে ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে শরিয়াহভিত্তিক বন্ড ইস্যু, এ খাতের তারল্যকে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়নের উৎস হিসেবে ব্যবহার, সরকারি ঋণের পোর্টফোলিও সম্প্রসারণের মাধ্যমে ঝুঁকি হ্রাস এবং ব্যয় সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকার ইসলামি বন্ড ‘সুকুক’ ইস্যু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এর আগে ৮ অক্টোবরে সুকুক ইস্যু ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত গাইডলাইনে অনুমোদন দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। ওই গাইলাইনের অনুচ্ছেদ ৪ অনুযায়ী সরকার, স্পেশাল পারপাস ভেহিকল বা এসপিভি এবং ট্রাস্টি হিসেবে ১৯ অক্টোবর ২০২০ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংককে নিয়োগ দেয়।
অনুমোদিত গাইডলাইন অনুযায়ী স্পেশাল পারপাস ভেহিকল বা এসপিভি শরিয়াহ নীতিমালা অনুসরণ করে সুকুক ইস্যুর লক্ষ্যে অর্থ বিভাগের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাব শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কমিটির মতামত অথবা পরামর্শ গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষ করবে। এ ছাড়াও সুকুক গ্রাহকদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষাসহ সুকুক সম্পদের ব্যবহার সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক এবং তদারকি কার্যক্রম সঠিক ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পরিচালনা করবে এবং সুকুক সম্পদ পরিচালনায় সুকুক ধারকদের আইনানুগ স্বার্থ নির্বিঘ্ন রাখার লক্ষ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর আওতায় সব বিরোধ নিষ্পত্তি করবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ডিসেম্বর ২০২০ বিজয়ের মাসেই অর্থ বিভাগ শরিয়াহভিত্তিক বিনিয়োগ চুক্তির আওতায় সুকুক ইস্যুর কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার অর্থ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে সুকুক ইস্যুর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক স্পেশাল পারপাস ভেহিকল (এসপিভি) এবং ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালনের নিমিত্ত অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে গঠিত এসপিভি আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সুকুক ইস্যু কার্যক্রম শুরু করবে বলেও জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অর্থায়নে সরকার নতুন একটি বন্ড ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে এটি প্রচলিত, সাধারণ বা ট্রেজারি বন্ড নয়। বিশ্বব্যাপী চালু আছে, এমন একটি শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি বন্ড এটি। এ ধরনের বন্ড ‘সুকুক’ নামে পরিচিত। সুকুক একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে সিলমোহর লাগিয়ে কাউকে অধিকার ও দায়িত্ব দেওয়ার আইনি দলিল।
বাংলা৭১নিউজ/এমএস