বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলো থেকে আসা শরণার্থীরা জার্মানিতে এখন বড় রাজনৈতিক ইস্যু। প্রায় এক বছর আগে জার্মানিতে শরণার্থীদের স্থান দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল। এরপর থেকে নিরাপত্তা, সামাজিক মূল্যবোধের ওপর শরণার্থীদের প্রভাব নিয়ে মের্কেলের বিরোধীরা করে প্রচারণা চালাচ্ছে বিরোধী দলগুলো।এমনকি আগে যারা শরণার্থীদের জার্মানিতে আগমনকে সমর্থন দিয়েছেন তারাও এখন এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
শরণার্থীদের বিষয়ে অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের স্লোগান হচ্ছে, ‘আমরা পারবো’।
গত এক বছরে জার্মানির অনেক পরিবর্তন হয়েছে। একইসাথে পরিবর্তন হয়েছে আহমেদ আনসালের। পেশায় দন্ত চিকিৎসক আনসাল সিরিয়া থেকে জার্মানিতে আসেন। জার্মানিতে বসবাসের অভিজ্ঞতা ভালো বলে জানালেন তিনি।
আনসাল বলেন, ‘অনেক নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। অনেকেই পরিবারের সদস্যদের মতো কাছের মানুষে পরিণত হয়েছেন।’
শহরের উপকণ্ঠে আবেনসবার্গে দিগন্তবিস্তৃত ভুট্টাক্ষেতের কাছে শরণার্থীদের জন্য নতুন ঘর বানানো হচ্ছে।এখানে প্রায় ৪০০ শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়া হবে। এই শহরে পরিবর্তন খুব নিয়মিত নয়। অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের প্রতিশ্রুতি হচ্ছে, জার্মানি জার্মানিই থাকবে।
যদিও অনেকেই সেই কথায় আশ্বস্ত নয়। আবেনসবার্গের মেয়র উবার ব্রেন্ডলের বলেন, ‘যদি অভিবাসীদের সংখ্যা আরো বাড়ে, তাহলেও সমাজে অনেক পরিবর্তন আসবে। এটা আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। আমি মনে করি অ্যাঙ্গেলা মের্কেল মানবিক দিক বিবেচনা করে গত বছর একটি কথা বলেছিলেন। আমার মনে হয় না আজ তিনি সেই কথা বলবেন।’
সামাজিক পরিবর্তন নিয়ে জার্মানিতে অস্বস্তি কাজ করছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তথাকথিত আইএসের মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দুইজন আশ্রয়প্রার্থীর চালানো সন্ত্রাসী হামলা।
আবেনসবার্গের এক ফল ব্যবসায়ী মনে করেন, জার্মানরা সাহায্য করতে চায়, তবে তাদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা কাজ করছে।
শরণার্থী চাপের কারণে সমর্থন আগের চেয়ে কমেছে মের্কেলের।আগামী বছর জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।এদিকে মের্কেলের রক্ষণশীল দল খুব দ্রুতই অভিবাসনবিরোধী ডানপন্থী দলের কাছে ভোট হারাচ্ছে।
সমর্থন ধরে রাখতে মের্কেলকে জার্মানদের কাছে অন্তত দুটি বিষয় প্রমাণ করতে হবে। একটি হচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদে শরণার্থীদের আগমন নিয়ন্ত্রণ এবং দ্বিতীয়ত জার্মানিকে নিরাপদ রাখা।
জার্মানি এখন কাছ থেকে আবেনসবার্গের মতো শহরগুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখছে। এই শহরের একটি লোহার কারখানায় কাজ করে কিছু তরুণ শরণার্থী। জার্মান সমাজে শরণার্থীদের একীভূতকরণে কারিগরী শিক্ষা বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
প্রশিক্ষক আর্নল্ড অ্যারোনলাইটনা মনে করেন, এ বিষয়ে মের্কেলের আরো সাহায্য প্রয়োজন। তিনি সঠিক কাজ করেছেন। তবে এখন আমাদের এক ধাপ পেছনে যাওয়া উচিত। শরণার্থীদের সংখ্যা সীমিত করাটা বিতর্কিত বিষয়। তবে আমাদের সেটা করতে হবে। একইসঙ্গে ইউরোপের সহযোগিতাও আমাদের প্রয়োজন।
এখনো প্রশিক্ষণরত শরণার্থীদের কাজ শুরু করতে অন্তত তিন বছর লাগবে। এখনও নিশ্চিত নয় যে, তারা এই দেশে থাকতে পারবে কিনা।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস