শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেটকারে বাসের ধাক্কা, নিহত ৫ নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা তদন্ত চলছে: ফায়ারের ডিজি উন্নয়নের লক্ষ্যে চীনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রাশিয়ার মিসাইলের আঘাতে ভূপাতিত হয় ওই বিমান শেষ দিনে ভিড় বেড়েছে, পছন্দের ফ্ল্যাট খুঁজছেন অনেকেই বিআরটিএ নির্ধারিত সিএনজি অটোরিকশার জমা ৯০০ টাকা কার্যকরের দাবি ৬ মাস ধরে নিখোঁজ বাংলাদেশিকে পাওয়া গেল থাই নারীর সঙ্গে হোটেলে ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর হওয়া উচিত : প্রধান উপদেষ্টা মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, ইউপি সদস্যসহ নিহত ২ জাহাজে ৭ খুন: বিচারের দাবিতে কর্মবিরতিতে নৌযান শ্রমিকরা পঞ্চগড়ে টানা চারদিন দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ইয়েমেনের বিমানবন্দরে হামলা, অল্পের জন্য বাঁচলেন ডব্লিউএইচও প্রধান গান পাউডার ব্যবহার হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখতে ‘বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ’ পানির ট্যাংকে লুকিয়ে ছিলেন আ. লীগের ‘ভাইরাল নেত্রী’ কাবেরী পাবনায় দাঁড়িয়ে থাকা করিমনে ট্রাকের ধাক্কায় তিন শ্রমিক নিহত, আহত ৫ নববর্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ ক্রীড়া পরিষদে অস্থায়ী অফিস ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মারা গেছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যেখানে চলবে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সংস্কার ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়: প্রধান উপদেষ্টা

লোডশেডিং কোথাও দুই ঘণ্টা, কোথাও দিনে ছয় ঘণ্টা

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০২২
  • ৬৭ বার পড়া হয়েছে

দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন কমায় চাহিদার সঙ্গে ঘাটতির ব্যবধান বাড়ছে। গত বুধবার বৃষ্টির কারণে চাহিদা কমে যাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ছিল। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে হিমশিম অবস্থায় পড়তে হয়েছে বিতরণ সংস্থাগুলোকে। এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের ঘোষণা দিলেও গড়ে দুই ঘণ্টার বেশি হচ্ছে সারা দেশে। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে কোথাও কোথাও ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, দিনে ৯৭৬ মেগাওয়াট ঘাটতি হলে এক ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হয়। কিন্তু দেশে এখন প্রতিদিন বিদ্যুৎ ঘাটতি দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি। ফলে সব এলাকায় সমানভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে কোথাও কোথাও কয়েক ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে জ্বালানি আমদানি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরপর গত মঙ্গলবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় ডিজেলচালিত সব বিদ্যুৎকেন্দ্র। আবার গ্যাসের সরবরাহও কমে গেছে। ফলে চাহিদামতো বিদ্যুতের উৎপাদন করা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সরকারিভাবে ঘোষণা দিয়েই মঙ্গলবার থেকে এলাকাভিত্তিক ‘এক ঘণ্টার’ লোডশেডিং শুরু হয়। প্রথম দিন থেকেই তা মানা যায়নি। আবার বিদ্যুৎ বিভাগ আগেই বলে রেখেছে, এক সপ্তাহ পরিস্থিতি দেখে লোডশেডিং দুই ঘণ্টা করা হতে পারে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র বলছে, জ্বালানির (গ্যাস, ফার্নেস অয়েল ও ডিজেল) অভাবে গতকালও ৫ হাজার ২৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়নি। এ ছাড়া কারিগরি কারণে আরও দুটি কেন্দ্রে ৮০৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। গতকাল সন্ধ্যা সাতটায় সর্বোচ্চ উৎপাদিত হয়েছে ১১ হাজার ৮৩৯ মেগাওয়াট। তখন চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ৯৬৫ মেগাওয়াট। ঘাটতি হয়েছে ১ হাজার ৭১৮ মেগাওয়াট।

তবে পিডিবির দেওয়া চাহিদার এই হিসাবের সঙ্গে একমত নয় বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলো। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) সূত্র বলছে, সন্ধ্যা সাতটায় তাদের আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। আর ঢাকার দুই বিতরণ কোম্পানি (ডিপিডিসি ও ডেসকো) ঘাটতি পেয়েছে ৩২০ মেগাওয়াটের বেশি। গত তিন দিনের মধ্যে গতকাল সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ বিদ্যুতের ঘাটতি হয়েছে ঢাকায়। ফলে বাধ্য হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সন্ধ্যার পর লোডশেডিং বাড়াতে হয়েছে। রাত আটটায় দোকানপাট বন্ধের পর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল রাতে মুঠোফোনে বলেন, ঢাকার কোথাও দুই ঘণ্টা এবং ঢাকার বাইরে কোথাও কোথাও চার ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিংয়ের তথ্য আসছে। এর কারিগরি কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক সপ্তাহ পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ঢাকার বাইরে বিদ্যুতের পরিস্থিতি বেশ খারাপ। এসব এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলো বলছে, চাহিদার চেয়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ কম। এমন পরিস্থিতিতে লোডশেডিংয়ের রুটিন মানা সম্ভব নয়। সরকারের ঘোষণা থাকায় বাধ্য হয়ে তাঁরা রুটিন প্রকাশ করেছেন।

গ্রামে বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে প্রায় অর্ধেক সরবরাহ

বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলার বাসিন্দা হারুনুর রশীদ গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সাত ঘণ্টায় সাড়ে তিন ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে। যদিও রুটিন অনুসারে বেলা একটা থেকে দুইটা এবং রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত মোট দুই ঘণ্টা লোডশেডিং করার কথা ছিল।

বগুড়ায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৪০ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে গড়ে ৮০ মেগাওয়াট। বগুড়ার মতোই একই অবস্থা রংপুর শহরেরও। বগুড়া ও রংপুর শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) লিমিটেড।

বগুড়া শহরে দুই ঘণ্টা করে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের রুটিন ঘোষণা করলেও লোডশেডিং করা হচ্ছে গড়ে ছয় ঘণ্টার বেশি। আর গ্রাম এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে শহরের দ্বিগুণের বেশি। বগুড়ার শাহ সুলতান গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল গফুর বলেন, তাঁর তিনটি হিমাগারে সাত লাখ টন আলু আছে। লোডশেডিংয়ের কারণে প্রতিদিন গড়ে ছয় ঘণ্টা জেনারেটর চালু রাখতে হচ্ছে।

রংপুরের গ্রাম এলাকায় বিদ্যুতের অবস্থা আরও শোচনীয়। জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার প্রায় ৬০০ মুরগির খামারি লোডশেডিংয়ের কারণে বড় সমস্যায় পড়েছেন। খামারি ফেরদৌস আলম বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি মুরগি মারা যাচ্ছে।

নেসকো রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেন বলেন, জেলায় চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে।

উত্তরের আরেক জেলা দিনাজপুরেও লোডশেডিংয়ের সূচি মানা যাচ্ছে না। শহরের গণেশতলা এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী মিনার হোসেন গতকাল বিকেলে বলেন, ‘বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে বিদ্যুৎ গেছে, আসছে দুপুর সাড়ে ১২টায়। বেলা ৩টা ১৯ মিনিটে বিদ্যুৎ গেছে, আসছে ৪টা ২১ মিনিটে। সন্ধ্যাটা পড়ে আছে, রাতটা পড়ে আছে।’

দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, তাঁদের বিদ্যুৎ প্রয়োজন ১৩২ মেগাওয়াট। পাচ্ছেন ৩০ থেকে ৩৫ মেগাওয়াট।

কতটা সাশ্রয় হচ্ছে, নজরদারিতে কমিটি

এদিকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কার্যক্রম নজরদারি জোরদার করতে গতকাল পাঁচ সদস্যের কমিটি করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এই কমিটির নেতৃত্ব দেবেন বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন)।

লোডশেডিংয়ের তথ্য এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহকদের জানানো, রাত আটটার পর দোকানপাট, বিপণিবিতান বন্ধের বিষয়টি জোরদার করা, ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে সভা আয়োজন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে বাতি ও এসির ব্যবহার কমানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে কাজ করবে এ কমিটি।

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: প্রথম আলো

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com