বাংলা৭১নিউজ, বেনাপোল প্রতিনিধি: খুলনা -কোলকাতা রুটে সরাসরি চলাচলকারী ট্রেনে দিন দিন কমতে শুরু করেছে যাত্রী সংখ্যা। ১০টি কোচের ট্রেনটিতে ৪৫৬টি আসন থাকলেও যাতায়াত করছে ১০০ থেকে ১২০ জন যাত্রী। অথচ বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ৪/৫ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী প্রতিবেশি দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করছে। তবে যাত্রী সংখ্যা কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে ট্রেন কর্তৃপক্ষ কোন মন্তব্য করতে রাজি নন। কর্তৃপক্ষ’র পদ্ধতিগত ভুলের কারনে ট্রেনে’র যাত্রী সংখ্যা কম হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন যাত্রীরা।
যশোর ও বেনাপোল রেলস্টেশনে টিকিট বিক্রি না করা, যশোর ও বেনাপোলাঞ্চলের মানুষের জন্য স্টপেজ না দেয়া অন্যদিকে সপ্তাহে একদিন মাত্র এ রুটে ট্রেন চলাচল ও ১২০ কিলোমিটার সড়কে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা ভাড়া নির্ধারন করায় যাত্রী সংখ্যা কম হওয়ার অন্যতম কারন। । যেখানে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে একজন পাসপোর্ট যাত্রীর কোলকাতায় যেতে ট্রাভেল ট্যাক্স সহ খরচ হয় ৬০০টাকা। ইতিমধ্যে যশোর নাগরিক কমিটি যশোর রেল স্টেশনে টিকিট বিক্রয় ও যাত্রী উঠানো নামানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। তাতেও তেমন একটা সাড়া মেলেনি রেল কতৃপর্ক্ষ’র কাছ থেকে।
খুলনা- কলকাতা রুটে আন্ত:দেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধন এক্সপ্রেসের পরীক্ষা মুলক যাত্রা শুরু হয় ১৭ নভেম্বর ২০১৭ সালে । গত ৭ মাসে ট্রেনের যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি না পেয়ে ক্রমগত কমতে শুরু করেছে। ফলে লোকসানের বোঝা টানতে হচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষের
ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রী মনতোষ বসু বলেন, দু‘দেশের মধ্যে বন্ধন ট্রেনটি নিয়ে তেমন কোন প্রচার প্রচারণা না থাকায়, নির্দিষ্ট দুটি স্টেশনে টিকিট বিক্রি করায় যাত্রীরা ট্রেন যাতায়াতে আগ্রহ হারাচ্ছে। অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি ও স্টপিজের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলে ট্রেনে যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করেন।
বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী আসাদুল হক বলেন,ভারতীয় কাস্টমস’এ যাত্রী হয়রানি বন্ধ সহ সম্প্রতি বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রীদের ভারতে যেয়ে কমপক্ষে দু’রাত অবস্থান বাধ্যতামুলক করায় এবং সপ্তাহে এই রুটে একদিন বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন চালু থাকায় ট্রেনে করে কেউ আর যাতায়াত করতে চায় না। যদি সপ্তাহে ২/৩ দিন ট্রেন চলাচল ও ভাড়ার পরিমাণ কমালে যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
বেনাপোল রেল ষ্টেশন মাষ্টার শহিদুল ইসলাম বলেন, গত ১৬.১১.১৭ তারিখ খুলনা-কলকাতার মধ্যে বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু হয়। গত ৭ মাসে ৩ হাজার ৪৪৫ জন যাত্রী কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এসেছে এবং বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৫৭৯ জন যাত্রী কলকাতায় গিয়েছে। নিরাপদে এবং সুষ্ঠুভাবে যাত্রী চলাচল করার পরও যাত্রীর সংখ্যা দিন দিন কমতে শুরু করেছে। বন্ধন এক্সপ্রেসটি যদি সপ্তাহে ২/৩ দিন চলাচল ও যশোর , বেনাপোলে’র মানুষের জন্য টিকিটি বিক্রি এবং স্টপেজ দেয়া হলে যাত্রী সংখ্যা বাড়বে বলে তিনি জানান।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, বন্ধন এক্সপ্রেসে যে সকল যাত্রী সরাসরি যাতায়াত করেন, আমরা সেই সকল যাত্রীকে ভাল সার্ভিস দিচ্ছি। আপাতত যাত্রীর সংখ্যা একটু কম আছে। যতদ্রুত সম্ভব আমরা ইমিগ্রেশন’র কাজ দ্রুত সম্পন্ন করি বিধায় আমাদের বিরদ্ধে যাত্রীদের কোন অভিযোগ নেই।
বেনাপোল কাস্টম হাউস সহকারী কমিশনার নু চ প্রু বলেন, বন্ধন এক্সপ্রেস খুলনা টু কলকাতা, কলকাতা টু খুলনা যাত্রীদের সুন্দর সার্ভিস দিচ্ছে। যাত্রীরা খুলনা ও কলকাতা স্টেশনে ভাল সেবা পাচ্ছেন। কাস্টমসের পক্ষ থেকে তড়িৎ গতিতে আমরা সার্ভিস দিয়ে থাকি এবং ট্রেন আসার সাথে সাথে হল রুমে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এর আনুষ্ঠানিকতা দ্রুত সম্প্ন্ন করে থাকি। ট্রেনের বেশীর ভাগ যাত্রীরা হয় রুগী, না হয় তারা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যায়।তাই কাস্টমসের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য সেবা দেওয়া হয়।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস