হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি, পরবর্তীতে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে লেবানন। দেশটির সাম্প্রতিক সংকট নিরসনে সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ। ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত ফরাসি উপনিবেশ ছিল লেবানন। এবার সহায়তার বার্তা দিতে শুক্রবার লেবানন সফরে পৌঁছেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। যেখানে তিনি লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এবং প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালামের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক আরব নিউজ।
এতে বলা হয়েছে, এই সফরের মাধ্যমে ম্যাক্রো লেবাননের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সমর্থন জানাবেন, কারণ দেশটি দীর্ঘদিনের অস্থিতিশীলতার পর নতুন এক যুগে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দীর্ঘ দুই বছরের রাজনৈতিক শূন্যতার পর গত ৯ জানুয়ারি আউন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং সালামকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেন। এখন তাদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ হল—ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের পরের সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি সামলানো এবং দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠা।
ম্যাক্রোঁর সফরের অন্যতম লক্ষ্য হল আউন ও সালামের নেতৃত্বকে শক্তিশালী করা, লেবাননের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত এবং দেশের ঐক্য রক্ষা করা।
জানা গেছে, সফরকালে ম্যাক্রোঁ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। কারণ ২৬ জানুয়ারির মধ্যে ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়িত করার সময়সীমা রয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, গত বছরের ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের ফলে হিজবুল্লাহর শক্তির দুর্বলতা লেবাননের রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার সুযোগ দিয়েছে। ফ্রান্স শুরু থেকেই লেবাননের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এছাড়া, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে এক ফোনালাপে, ম্যাক্রোঁ লেবাননে শক্তিশালী সরকার গঠনের জন্য তাদের পূর্ণ সমর্থন ঘোষণা করেছেন।
নতুন সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হবে লেবাননের রাজনৈতিক বৈচিত্র্যকে একত্রিত করা, ইসরাইল-লেবানন যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা এবং দেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যকর করা।
এই সফরে ম্যাক্রোঁ লেবাননের পার্লামেন্ট স্পিকার ও হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ মিত্র নবিহ বেরি এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর (ইউনিফিল) প্রধান আরোলদো লাজারোর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। তিনি একই সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন সম্পর্কিত কমিটির প্রধানদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। যাতে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের পর সেখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা এবং লেবানন সেনাবাহিনী নিযুক্ত হতে পারে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ