শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
দ্বাদশ সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের জন্য ৯৪০ প্রশ্ন ভরিতে আরও ১৮৭৮ টাকা কমলো সোনার দাম সব প্রার্থী আমাদের কাছে সমান: ইসি আলমগীর টোল আদায়ে দুর্নীতি, দুদকের হস্তক্ষেপে ইজারা বাতিল রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশের পাশে আছে ইউরোপ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেই আ.লীগ ক্ষমতায় এসেছে : কাদের এপ্রিলে নির্যাতনের শিকার ১৯৩ নারী-শিশুকন্যা ৯ মে পর্যন্ত চলবে সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ মৃত ব্যক্তিদের জাল সনদ: মিল্টন সমাদ্দারের ৩ দিনের রিমান্ড গণমাধ্যম শুধু মুক্ত নয়, উন্মুক্ত : তথ্য প্রতিমন্ত্রী যাত্রীবাহী বাস থেকে ৭টি স্বর্ণের বারসহ চোরকারবারি আটক আমন মৌসুম থেকেই চাল ছাঁটাই ও পলিশ বন্ধ করা হবে : খাদ্যমন্ত্রী টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ১০ বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণের অভিযোগ আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে শনিবার থেকে খোলা স্কুল-কলেজ: শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইসলামী ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা জমা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১২ কেজি এলপিজির দাম কমলো ৪৯ টাকা শেয়ার ছাড়বে রূপালী ব্যাংক নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

লিজের সব ট্রেনেই লাভ সরকারিতে লোকসান

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৯
  • ২০৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: রেলে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। বহরে যুক্ত হচ্ছে অত্যাধুনিক যাত্রীবাহী বগি। তার পরও ফি বছর লোকসান বাড়ছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হল, লিজে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া ট্রেনগুলো লাভ করছে। ক্ষেত্রবিশেষে মুনাফার অঙ্ক সরকারি নিয়ন্ত্রণে থাকা সময়ের চেয়ে ১৮০ শতাংশ বেশি।

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লাইনে লিজের ‘ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লোকাল’ ট্রেনটি বছরে রেলকে দিচ্ছে ৬ কোটি ২৪ লাখ ৫৯ হাজার ২৮০ টাকা। অথচ লিজ প্রদানের আগে বছরে আয় হতো ২ কোটি ৯৫ লাখ ৮৬ হাজার ৯৬০ টাকা। অর্থাৎ এ পথে লিজে আয় বেড়েছে। রেলে বর্তমানে ২১টি ট্রেন বেসরকারি খাতে চলাচল করছে। ২১টি ট্রেন প্রতিদিন ৭৬টি ট্রিপ দিচ্ছে। লোকাল এসব ট্রেন বছরে প্রায় ৬০ কোটি টাকা রেলকে পরিশোধ করছে। লিজের আগে এসব ট্রেন বছরে আয় করত মাত্র ২৪ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে রেলওয়ে মহাপরিচালক কাজী রফিকুল আলম জানান, লোকাল ট্রেনগুলো বছরের পর বছর সরকারিভাবেই পরিচালিত হয়ে আসছিল। এক সময় দেখা যায়, এসব ট্রেন পরিচালনায় ব্যাপক লোকসান হচ্ছিল। পরে ট্রেন্ডারের মাধ্যমে লিজ প্রদান করা হয়। লিজের মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত। তিনি বলেন, লিজে রেলওয়ের আয় হচ্ছে, যা লিজের আগে কখনও সম্ভব হয়নি। লিজ অনুযায়ী ট্রেনগুলো চলুক বা না চলুক রেলকে টাকা পরিশোধ করতেই হবে। লিজে ১০০, ১৫০ শতাংশ আয় বেড়েছে।

জানা যায়, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ৯টি এবং পশ্চিমাঞ্চলে ১২টি লোকাল ট্রেন লিজে চালু আছে। রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, খুলনা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রহনপুর লাইনে ‘মহানন্দা-৫৮৫’ লোকাল ট্রেনটি বর্তমানে বছরে ৩ কোটি ১৮ লাখ ৪৪ হাজার ১৬০ টাকা রেলকে প্রদান করছে। এটি লিজ প্রদানের আগে বছরে আয় করত মাত্র ৪৬ লাখ টাকা। ঈশ্বরদী-ঢাকা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ লাইনে রাজশাহী কমিউটার বর্তমানে বছরে রেলকে ৬ কোটি ১৫ লাখ ৫ হাজার ৭৮৪ টাকা প্রদান করছে।

লিজ প্রদানের আগে এ ট্রেনটি আয় করত মাত্র ৫১ লাখ টাকা। খুলনা-গোয়ালন্দঘাট-খুলনা লাইনে ‘নক্সীকাঁথা’ মেইল বর্তমানে বছরে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮০ টাকা রেলকে দিচ্ছে। লিজের আগে ট্রেনটি বছরে আয় করত মাত্র ২৭ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মিয়া জাহান জানান, রেল আসলে লাভজনক নয়, লাভ হচ্ছে না। রেল সেবা খাত, এখানে লাভের চেয়ে সেবা প্রদানকে গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। তবে এটা সত্যি আমরা যেসব ট্রেন লিজে দিয়েছি সেসব ট্রেন থেকে অনেক বেশি আয় হচ্ছে, যা লিজ প্রদানের আগে কখনও সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, বর্তমানে রেলে একজন যাত্রী এক কিলোমিটার ভ্রমণ করলে রেলের খরচ হচ্ছে ২ টাকা ৬৫ পয়সা, আর আয় হয় মাত্র ৬১ পয়সা। লিজ দেয়া ট্রেনগুলোতে আমাদের লোকবলের তেমন প্রয়োজন হচ্ছে না।

টিকিট বিক্রি থেকে শুরু করে যাত্রীসেবা সবই তারা করছে। উন্মুক্ত টেন্ডারে এসব ট্রেন লিজ দেয়ায় টাকার পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়, যা আমাদের জন্য অনেক লাভজনক। এছাড়া লিজ অনুযায়ী প্রতি বছর আরও ১০ শতাংশ হারে টাকা বাড়বে। আমাদের লোকবল নেই, লোকবল থাকলে এসব ট্রেন আমরা নিজেরাই চালাতাম। এখন সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে, এসব ট্রেন সব সময় লিজে চালাবে, নাকি সরকার চালাবে। সরকারি নির্দেশনায় ট্রেনগুলো লিজে গেছে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ট্রেন চালক, স্টেশন মাস্টার ও ট্রেন পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকার পরিচালিত লোকাল ট্রেনগুলো লাভজনক করা সম্ভব। এজন্য সংশ্লিষ্টদের সক্রিয় হতে হবে, যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে হবে। ট্রেনে টিকিট চেকিং ও টিকিট কাটা নিশ্চিত করতে হবে।

যা লিজের ট্রেনগুলোতে সম্পূর্ণ করা হচ্ছে। তারা বলেন, লিজে থাকা ট্রেনগুলোর টিকিট ছাপানো থাকে। স্টেশন চত্বর এবং ট্রেনের ভেতর টিকিট বিক্রি করা হয়। একটি যাত্রীবাহী বগিতে ২ জন করে টিকিট কালেক্টর এবং ২টি বগি সমন্বয়ে একজন সুপারভাইজার কাজ করে। একজন যাত্রী কোনো অবস্থাতেই বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারে না। লিজবিহীন ট্রেনগুলো যাত্রীরা ইচ্ছামতো ব্যবহার করত। ৭০-৭৫ শতাংশ যাত্রী টিকিট কাটত না, দেখারও কেউ ছিল না।

বাণিজ্যিক বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সরকারিভাবে এসব ট্রেন পরিচালিত হলে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাভ হয়। বিনা টিকিটি যাত্রী, মালামাল পরিবহনকারীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে তারা টাকা আদায় করে। টিকিট কালোবাজারি হয়, যা লিজের ট্রেনগুলোতে সম্ভব নয়।

মূলত নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সঠিকভাবে টিকিট বিক্রি ও চেকিং না করায় প্রতিটি ট্রেন থেকেই বড় অঙ্কের আয়বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, রেলের লোকসানের প্রধান কারণ অদক্ষতা, অপচয়, দুর্নীতিসহ সার্বিক অব্যবস্থাপনা। এ বিষয়ে রেলপথ সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, সরকারের নির্দেশনায় এসব ট্রেন বেসরকারি খাতে লিজ দেয়া হয়েছে। আমরা রেলে লোকবল বাড়াতে চেষ্টা করছি। যথাযথ লোকবল বাড়িয়ে লিজের ট্রেনগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার চেষ্টা করব। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে, কি করে যাত্রীদের যথাযথ সেবা প্রদান করে ট্রেন পরিচালনায় লাভবান হওয়া যায়।

বাংলা৭১নিউজ/এইচ.এস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com