বান্দরবানের লামা উপজেলায় দুর্বৃত্তদের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ১৭টি বসতঘরসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ও প্রশাসন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বৃহস্পতিবার বিকালে বান্দরবানের লামা উপজেলায় অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত ত্রিপুরা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের দেখতে যান তারা।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে তংগোঝিরিপাড়ায় দুর্বৃত্তদের লাগানো আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি গ্রাম পরিদর্শনে যান বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিনের নেতৃত্বে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, জেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে জরুরি ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তা দিয়েছে।
জেলা প্রশাসনের মতে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর স্থায়ী বাসস্থান লামার একটি নিকটবর্তী গ্রামে এবং আগুনে পুড়ে যাওয়া বাসাগুলো ছিল তাদের অস্থায়ী টং ঘর।
এর আগে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন এবং বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার শাহিদুল্লাহ কাউসার বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন, যাদের অস্থায়ী বাসস্থান এ হামলায় পুড়ে গেছে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বান্দরবানের পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাউছার, লামা উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রুপায়ন দেব, লামা থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. এনামুল হক ভুঁইয়াসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানান, লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের নতুন তংগোঝিরিপাড়ায় এসপি বাগান এলাকায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১৮ পরিবার বসবাস করতেন দীর্ঘদিন ধরে। পাড়াটির নাম দেওয়া হয়েছিল তংগোঝিরি নতুনপাড়া।
বড়দিনের উৎসব উপলক্ষে মঙ্গলবার রাতে পাড়ার সবাই পার্শ্ববর্তী তংগোঝিরিপাড়া গির্জায় প্রার্থনায় যান। এ সময় পাড়ায় কেউ না থাকার সুযোগে দুর্বৃত্তরা পাড়ার বসতঘরগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় পাড়ার ১৭টি বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে বান্দরবান পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করে ইতোমধ্যে মামলায় সাতজন এজাহারভুক্ত আসামির মধ্যে ৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, পাড়ায় ১৯টি পরিবারের মধ্যে ১৭টি ঘর আগুনে পুড়ে গেছে। পুলিশসহ প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘুরে দেখেছি। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কম্বল, কাপড়, চাল, কিছু শুকনো খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে, যাদের ঘরবাড়ি ছিল, তাদের ঘরবাড়ি তৈরিতে সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ